জমে উঠেছে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রোববার (২ জুলাই) বিকালে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে পরিচালক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মো. লোকমান হোসেন আকাশ। সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতাদের সঙ্গে সাধারণ সদস্যদের ভোটাধিকার আদায়ের পক্ষের জোটের প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এদিকে, এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান পর্ষদের মেয়াদ শেষ হতে চলছে। তাই আগামী ৩১ জুলাই নতুন নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
সম্প্রতি এফবিসিসিআই নির্বাচন নিয়ে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের উদ্যোগে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা লেডিস ক্লাবে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। এছাড়া, এই পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত হোটেল ও রেস্তোরাঁয় নির্বাচনি ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে। চলছে প্রার্থী বাছাইয়ের কার্যক্রম।
এদিকে, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ, যার প্রধান নেতৃত্বে রয়েছেন মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ - আহ্বায়ক (সাবেক সহ সভাপতি, এফবিসিসিআই), মুনতাকিম আশরাফ - যুগ্ম আহ্বায়ক (সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি, এফবিসিসিআই), ও নিজাম উদ্দিন রাজেশ - যুগ্ম আহ্বায়ক (সাবেক সহ সভাপতি, এফবিসিসিআই)। এছাড়া, এই পরিষদ থেকে পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন ভিসতা ইলেক্ট্রনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইনেকট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল শিল্পের অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন আকাশ। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেন্জ মোকাবিলায় নিজেকে প্রস্তুত এবং দেশের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে বদ্ধপরিকর।এসোসিয়েশন গ্রুপে তার ভোটার নম্বর ১৮৩০।
ভোট প্রশ্নে সাধারণ সদস্যদের ইচ্ছাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে তাদের চলমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। এই পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত দুই মেয়াদী নির্বাচন ছাড়াই সিলেকশন পদ্ধতিতে সাধারন ভোটারদের ব্যাপক ক্ষোভ থাকায় ভোটাধিকার আদায়ে সম্মিলিত পরিষদের এই উদ্যোগে সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।
জানা গেছে, নির্বাচনে লড়তে শিগগিরই অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে আরেকটি পরিষদের আত্মপ্রকাশ করেছে। ওই গ্রুপ প্রকাশ্যে আসার পর নির্বাচনি মাঠ গরম হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংগঠনটির সাধারণ সদস্যরা।
এফবিসিসিআই-সূত্রে জানা গেছে, তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলবে। ভোটশেষে পরিচালক পদে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে এফবিসিসিআই সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ছয় জন সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন হবে ২ অগাস্ট। পরিচালক পদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ জুলাই। ১৫ জুলাই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর প্রার্থিতা বাতিলের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ জুলাই। একইদিনে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ এবং ২০২১ সালে নির্বাচন ছাড়াই দুইবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেডারেশনের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। এফবিসিসিআইয়ে সর্বশেষ ভোট হয় ২০১৭ সালে, তাও আংশিক। ওই সময় সভাপতি হন শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। পরিচালক পদেও চেম্বার অংশে ভোট ছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। বর্তমানে ফেডারেশনের পর্ষদ ৮০ জনের। এসব পদ আবার দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে জেলাভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বা চেম্বার থেকে ৪০ জন পরিচালক হয়েছেন। বাকি ৪০ পরিচালক পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের। তবে ৮০ জন পরিচালকের মধ্যে ৩৪ জন (১৭ জন পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠন ও ১৭ জন জেলাভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন) মনোনয়নের মাধ্যমে ভোট ছাড়াই পদ পান। বাকি ৪৬ জনকে সরাসরি সদস্যদের ভোটে জিতে আসতে হয়।
ঢাকা বিজনেস/এম