২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার



মাঠজুড়ে সূর্যমুখীর হাসি

মুঈন তাজ ওয়াল, মেহেরপুর || ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:০১ পিএম
মাঠজুড়ে সূর্যমুখীর হাসি


মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি বিএডিসি ফার্মে সূর্যমুখী ফুলের হাসি দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের উদ্যোগে বারি সূর্যমূখী-৩ জাত এবার ৪ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে। জমির অধিকাংশ গাছেই ফুল ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শতভাগ জমিতেই ভালো বীজ পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সূর্যমুখীর বাগান এখন প্রকৃতিপ্রেমীদের উপভোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। দলে দলে তারা ছুটে চলছেন এসব বাগানে। ছবি তুলে পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পড়ন্ত বিকেলে সূর্যমুখীর বাগানে ফুলপ্রেমীদের ভিড় থাকে বেশি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সূর্যমুখী চাষের ৯০-১০৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারেন। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৭-৮ মণ বীজ পাওয়া যায়। বিঘা প্রতি কৃষকরা ২০-২৫ হাজার টাকার বীজ বিক্রি করতে পারেন। এই বীজ থেকে সয়াবিন তেল পাওয়া যায়। 

১৯৭৫ সাল থেকে সূর্যমুখী একটি তেল উৎপাদনকারী ফসল হিসেবে বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে আবাদ হচ্ছে। তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভূমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও উপকূলীয় এলাকায় শীতকালীন শষ্য হিসেবে চাষ করা হয়।

মেহেরপুর শহরের বাসিন্দা বিপ্লব হোসেন বলেন, ‌‘সূর্যমুখী ফুলের কথা শুনে পরিবার নিয়ে দেখতে এসেছি। মাঠ ভরা ফুল দেখে চোখ জুড়িয়ে গেলো।’ 

সাদিয়া ইসলাম জানান, হলুদ আর সবুজে মেতে উঠেছে মেহেরপুরের আমঝুপি বিএডিসি মাঠ। এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। এই ফুলে যেমন চোখ জুরায়, তেমনি কৃষকের পকেটও ভরে।’ 


মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি বিএডিসি’র উপ-পরিচালক সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশে যে তেলের ঘাটতি থাকে তা পূরণে বিদেশ থেকে তেল আমদানি করতে হয়। আমদানি করতে গিয়ে ২৮-৩০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যায়। যার জন্য সরকার এবার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। গত বছর আমাদের সাড়ে ৫ একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছিল। শিলা বৃষ্টির কারণে ফলন কম হয়েছিল, প্রতি বিঘা থেকে প্রায় ৮০ কেজি করে বীজ পেয়েছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর আমরা ৪ একর জমিতে বারি-৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিঘা প্রতি প্রায় ১৫০ কেজি করে ফলন পাবো বলে আশা করছি। এ তেলের দামও বেশি। সরিষার তেল যেখানে ২৫০ টাকা কেজি, সেখানে সূর্যমুখী তেলের দাম কেজিতে ৪০০ টাকা।’

দেড় একর জমিতে বিদেশ থেকে স্যাম্পল এনে গবেষণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের রয়েছে ১২টি। গবেষণায় যেটি ভালো হবে, সেটি প্রোডাকশনে যাবে। সূর্যমুখী চাষিরা ব্যাপক লাভবান হবেন। ১০০-১২০ দিনের মধ্যে এ বীজ পাওয়া যায়। সূর্যমুখী চাষ একটা ব্যাপক সম্ভাবনাময় ফসল বলেও জানান তিনি।

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন