০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, বুধবার



কাল ঈদ: দম ফেলার সময় নেই কক্সবাজারের কামারদের

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার || ২৮ জুন, ২০২৩, ০৭:৩৬ এএম
কাল ঈদ: দম ফেলার সময় নেই কক্সবাজারের কামারদের


কক্সবাজারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। পশু কোরবানির জন্য ধারালো দা, বটি, চাপাতি ও ছুরি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। দম ফেলার যেন সময় নেই তাদের। গোসল-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন। গত কয়েকদিন ধরে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত তারা।

কক্সবাজার সদরের পৌরসভা বড় বাজারে ৮ শতাধিক কামার পরিবার রয়েছে। কামারপট্টিতে এখন গেলেই শোনা যায় হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার খণ্ড। কেউ ভোঁতা হয়ে পড়া দা ও ছুরিতে শাণ দিচ্ছেন। কেউবা হাপর টানছেন। কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন।

পৌরসভার বড় বাজার ও মগবাজারে বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাকু ও বটির বেচাকেনা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি পিস বটি পাইকারি ২৫০ টাকা, খুচরা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাপাতি পাইকারি ৭০০, খুচরা ৮০০ টাকা, ছুরি সর্বনিম্ন ২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে জবাই করা ছুরি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতা শামীম বলেন, ‘আমি সবসময় কক্সবাজারের মগবাজার থেকে মালামাল নিয়ে যাই। কারণ এখান থেকে মাল নিলে অন্য জায়গা থেকে কম দামে নেওয়া যায় এবং তাদের সরঞ্জামগুলোও ভালো করে তৈরি।’

তবে বড়বাজার কারিগররা অভিযোগ করেন, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারাদিন আগুনের পাশে বসে থাকতে হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে কক্সবাজারে কমে যাচ্ছে কামার সম্প্রদায়ের মানুষ। বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করছেন অনেকেই।

কক্সবাজার সদর উপজেলার কামাররা বলেন, সারাবছর আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে এই সময় বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। উৎপাদন ও প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় লাভ আগের চেয়ে কম। কক্সবাজারের বড়বাজার, মগবাজার, লিংক রোড়, নাপ্পিতা বাজার , গোলদীঘীর পাড় ও বাহারছড়া এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় কামারদের জমজমাট ব্যবসা থাকলেও সদরের বড় বাজারের মতো কোথায়ও নেই।

কক্সবাজারের কামার নিশান, দিপিংকর কর্মকার, অভি কর্মকার, দিলিপ শিকদার ও মনোরঞ্জন কর্মকার জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করেন। এবারও এসব উপকরণের চাহিদা বেড়েছে। সারাবছর তারা যে আয় করেন, তার অর্ধেক আয় করেন এসময়। কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি হচ্ছে কয়লা। কিন্তু এই কয়লা এখন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে কয়লা সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে সেই তুলনায় কয়লার দামও অনেক বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সেই তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি।

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন