০৮ জুলাই ২০২৪, সোমবার



দুয়ারে কোরবানির ঈদ, ব্যস্ততা নেই কামারপল্লীতে (ভিডিও)

মো. আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া || ২৭ জুন, ২০২৩, ১০:০৬ এএম
দুয়ারে কোরবানির ঈদ, ব্যস্ততা নেই কামারপল্লীতে (ভিডিও)


কোরবানির ঈদের আর মাত্র দুই দিন বাকি। এই সময়ে কামালপল্লীতে হাঁপর ও হাতুড়ির শব্দে মুখরিত থাকার কথা। কিন্তু  বিদেশি দা, ছুরির দাপটে দেশীয় অস্ত্রের চাহিদা কমায় ভালো নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামারপল্লীর কর্মীরা।  তারা বলছেন, দেশি অস্ত্রের চাহিদা না থাকায় তাদের ব্যস্ততা কমেছে। তবে যেটুকু দা-ছুরি তৈরি হচ্ছে তারও বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।  এতে বিদেশি পণ্যের  সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজারে টিকে থাকতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

একসময় বৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামারপল্লীতে দিন-রাত দা, ছুরি, বটিসহ কোরবানির সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ততা থাকতো। তবে, এবার অনেকটাই অলস সময় কাটছে কামারদের। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানের কামারপল্লী যেন হারিয়েছে তাদের চিরচেনা রূপ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা কোরবানির সামগ্রী কেনার জন্য এখানে আসতো। সারাবছরের ক্ষতি এই সময়ে কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতো তারা। তবে এবার শুধুর দা, বটি, ছুরি শান দেওয়া ছাড়া নতুন হাতিয়ার তৈরির চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। 

কর্মকাররা জানান, কোরবানির সামগ্রী তৈরির কাঁচা মালসহ লোহা কয়লা ও রেতের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে লোহার দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, প্রতি টিন কয়লা ৪০/৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১০০-২০০ টাকায়।  এতে উৎপাদন খরচ বাড়লেও কমেছে লাভের পরিমাণ। তেমন চাহিদা না থাকায় বানানো পণ্য তারা সীমিত লাভে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এখানে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় হাজার টাকার বিভিন্ন কোরবানির সামগ্রী রয়েছে। 

কামারপল্লীর কারিগর দুলাল কর্মকার বলেন, ‘আগে এই কর্মের অনেক কদর ছিল। ঈদ এলে আমাদের কাজের অনেক ব্যস্ততা বেড়ে যেতো। আমরা আনন্দের সঙ্গে দিনরাত কোরবানির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করতাম। এখন আর কামার পল্লীতে তেমন কাজ নেই। বাপ-দাদার কর্ম হিসেবে এই পেশাকে এখনো আকরে রেখেছি। এখন আর এই কর্ম দিয়ে জীবন চলে না। অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি।’

আরেক প্রবীণ কারিগর গৌরপদ কর্মকার বলেন, ‘কোরবানির সামগ্রীর কাজকর্ম এখন আর আগের মতো নেই। আগের নেওয়া অর্ডারের টুকটাক কাজ এখনো করছি। নতুন কোনো অর্ডার পাইনি। বর্তমানের লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমাণ অনেকাংশে কমে গেছে। এই শিল্পটির দুর্দিন থাকায় আমাদের বংশের নতুন প্রজন্মও এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সরকার যদি আমাদের কামারদের প্রতি নজর রাখে, তাহলে আমরা এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে পারবো।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন