২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার



মোখা: কক্সবাজারের ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজার || ১৩ মে, ২০২৩, ০৮:৩৫ এএম
মোখা: কক্সবাজারের ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে


ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় কক্সবাজারের ৫৭৬ আশ্রয় কেন্দ্রে ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।  শনিবার (১৩মে) সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত তারা এসব আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে যান। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান এই তথ্য  জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়  বলা হয়েছে, জেলায় সিপিপির ৮ হাজার ৬০০ জন এবং রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজার ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। সেন্টমার্টিনে নেভি, কোস্ট গার্ড, পুলিশসহ অন্যদের মিলিয়ে ৩৭টি সরকারি স্থাপনা রয়েছে। তাই সেখানে সরকারি স্থাপনাগুলো সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।

দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য ২০ লাখ নগদ টাকা রাখা হয়েছে; যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ৫.৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩.৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩.৪ মেট্রিক টন শুকনা কেক, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন ও ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। জেলায় যে ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, সেগুলোতে ৫ লাখ ৫ হাজার ৯৯০ জন লোক রাখা যাবে। 

শনিবার (১৩মে) সকাল থেকে মেডিক্যাল দল, কোস্ট গার্ড, নৌ-বাহিনী, পুলিশ, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক দল, স্কাউট দল, আনসার বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট  সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া আনোয়ারার বলেন, ‘আমাদের ঘর গুলো সাগর তীরে। যেকোনো সময় ডুবে যেতে পারে। তাই প্রাণ বাঁচাতে আগে থেকে চলে আসছি।’ 

সালেহা আকতার নামে সাগর তীরের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার স্বামী পঙ্গু । তাই আগে থেকে চলে  এলাম। ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে তাকে নিয়ে কই যাবো? সে তো চলাফেরাও করতে পারে না। টেলিভিশন ও এলাকায় মাইকিং করে বলা হচ্ছিল আজ সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড় শুরু হতে পারে। তাই সবকিছু নিয়ে ডিসি স্যারের কার্যলয়ে চলে এলাম।’

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘রবিবার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি। এ সময় ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে। সংকেত আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের দুই দিক থেকে যেহেতু খোলা রয়েছে। পানি চলাচলের সুবিধা আছে। তবে, বড় ধরনের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওই অঞ্চলে পানি জমে থাকবে না। আবহাওয়া অফিস থেকে প্রতি মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় মোখার সব আপডেট জানিয়ে দেওয়া হবে।’

কক্সবাজার জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি থানায় আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। দুর্যোগকালীন লোকজনকে সহায়তা ও সহযোগিতা করতে হবে। লোকজনকে সহযোগিতার মাধ্যমে মানবিকতার পরিচয় দিতে হবে।’

জেলা প্রশাসক জানান, সকাল থেকে আমরা আশ্রায়কেন্দ্রগুলো খুলে দিয়েছি । উপকূলের মানুষ আসতে শুরু করেছে। পুরো জেলার মধ্যে যেসব আশ্রায়কেন্দ্র ছিল, সেগুলোতে ৪০ হাজারের বেশি লোক এসেছেন। আশা করি, আরো অনেকেই আসবেন। তবে কত লোক আসবে সেটা ঠিক বলা যাচ্ছে না।

এর আগে,কাল দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ১টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। শনিবার সকাল থেকে মোখার প্রভাবে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ধমকা হাওয়া চলছে।

ঢাকা বিজনেস/এনই



আরো পড়ুন