২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



শিল্প-সাহিত্য
প্রিন্ট

নক্ষত্রের নির্বাসন

শাহনাজ পারভীন || ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২, ০১:১২ পিএম
নক্ষত্রের নির্বাসন


নক্ষত্রের নির্বাসন
উল্কাপিণ্ড যখন তার সর্বোচ্চ গতিতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে 
তখনো তার গন্তব্য থাকে মাটির পৃথিবী 
রকেট বিএসআর যখন তার নির্দিষ্ট গতিতে নাসাপথে ছুটে যায় 
তখন তার নিশানাও সঠিক পথের দিশা খুঁজে নেয়

ব্রিটিশ কাউন্সিল, অলিয়ঁস ফ্রঁসেজে 
যেই মন নিয়ে একজন পরিচালক ছুটে যান, 
সেইভাবে প্রাতঃভ্রমণে বের হন কেউ?

আসলে পৃথিবীতে সকল নক্ষত্রের গন্তব্যই ভিন্ন 
চর্চাপদ থেকে কাহ্নপা 
প্রেম থেকে প্রকৃতি 
বোধ থেকে বোধোদয়
কবিতা থেকে চিত্র 
গান থেকে নাটক
গ্রুপ থিয়েটার, লেখক, পরিচালক, মঞ্চ আরও কতকিছু... 
শুধুমাত্র নক্ষত্রের নির্বাসন সকলের একই।

বুনোজল
ডিমভরা মাছগুলো সরীসৃপ খালে করে খেলা—
অথচ পড়েনি জাল, জেলেহীন জলকেলি বেলা।
বাঘের থাবার ভয়ে ভীরুপায়ে মধুবউ ঘোরে মধুবন—
মন তার বেহুলার ভেলা এক পতির ব্যথায় টনটন।

স্বামী তার সোনামুগ, শিমফুল, মাঠ ভরা পউস ফসল—
মৌসুমে আসে কাছে, জানে না বারমাসি—ব্যথা টলমল।
গভীর সমুদ্রে নাও, বোঝে না সরিষার হলুদ লগন—
মন যেন উড়োপাখি! ঘুমঘোরে তন্ময়-নীলচে গগন।

বুনোজলে তান দেখে মন তার হয় উচাটন—
দেহের কোটরে কাঁপন, শীত মাখা রাত কনকন।
ও সখী বল্ না আমায়, মন কেনো বুনোজল মাখে—
ফড়িং,  হট্টিটি, লালঠোঁট মাছরাঙা চোখে চোখে রাখে!

বুনোজেলে, মউওয়ালী, ঘ্রাণমাখা, বনজুড়ে ঘোর
কেনো সে আসে না ঘরে? বুনোজলে ভাসে মনচোর!

পারিজাত
একবার ভালোবাসা হয়ে গেলে মরে না তা
আজীবন উনুনের নিভন্ত আগুনের মতো উত্তাপ দেয় হৃদয়ের
যতই তাতে বরফ ঢালো না কেন, 
বাষ্প হয়ে উড়ে যায় মুহূর্তেই, 
বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দেয় প্রকৃতির মতো উর্বরতায়।

ভালোবাসা হয়ে গেলে মরে না তা
বিশ্ব সংসারে যদি না পারার বেদনা 
বুকের ভেতর গভীর ভাবে বাজে কখনো
তখনই ঝনাৎ শব্দে অন্তনিলাম্বরে 
ঘুরে দাঁড়ানোর উত্তাপ গায়ে লাগে 
পরম যত্নে বলে—‘কেঁদো না’ 
ভালোবাসি। ভালোবাসি।
ভালোবাসা আসলে মরে না কখনো।

যদি কখনো বিজয়ীর বেশে 
জয়িতার শ্রেষ্ঠ মাল্য কণ্ঠে ধারণ করো অকুণ্ঠ চিত্তে
যদি কখনো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হও 
ফুলের পাপড়ি মেখে অনর্গল 
ভালোবাসা তারও আগে ঝরে পড়ে 
আশিস প্লাবনে প্রচণ্ড বিশ্বাসী মাতাল হাওয়ায়। 
পরম প্রেমে বলে ওঠে—
‘দৌড়ালে কখনো ফুরায় না পথ।
আত্মবিশ্বাস হারিও না
ভালেবাসি। ভালোবাসি।’



আরো পড়ুন