প্রায় ৭ ঘণ্টা জ্বলার পর অবশেষে বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বেলা ১টার দিকে ৫০ ইউনিট ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ভয়াবহ আগুনের ঘটনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জায়গা করে নিয়েছে। আল-জাজিরা, রয়টার্স, চ্যানেল নিউজ এশিয়া ও আনন্দবাজারসহ অসংখ্য গণমাধ্যমে এই সংবাদটি প্রচার হচ্ছে।
আল-জাজিরা বার্তাসংস্থা এপির বরাত দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের রাজধানীর জনপ্রিয় পোশাক বাজারে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ৪৭টি ইউনিটের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ ফায়ারকর্মী কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আগুন লাগার কারণও জানা যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন দোকান মালিক বলেছেন, ‘সামনে ঈদ উপলক্ষে আমি প্রায় ১৫ লাখ টাকা ধার করে দোকানে নতুন পোশাক তুলেছি। আজকের আগুনে সব শেষ হয়ে গেলো।’
দৈনিক আনন্দবাজারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বঙ্গবাজারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। বহু দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। দমকলের ৫০টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। এলাকা জুড়ে উত্তেজনার পরিস্থিতি।দমকলের তরফে জানানো হয়, বঙ্গবাজার এলাকায় মোট ৫০টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ করছে।
বঙ্গবাজারের এই অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের খবর মেলেনি, তবে বহু সংখ্যক দোকান আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইদের বাজার সাজানোর পণ্য মজুত করে রাখা ছিল প্রায় সব দোকানেই। তা হারিয়ে হাহাকার করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগে যথাসম্ভব পণ্য নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছেন।
চ্যানেল নিউজ এশিয়ায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানীর একটি মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। ধুয়ায় ঢেকে গেছে পার্শ্ববর্তী এলাকা। আগুন নিয়ন্ত্রণে শত শত ফায়ারকর্মী কাজ করছে। তবে, এখন পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানা যায়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একটি মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। মার্কেটটিতে প্রায় ৩ হাজার দোকান রয়েছে।
এদিকে, পাকিস্তানের পত্রিকা ডনেও খবরটি বিশেষ গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানীর একটি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে দেশটির সেনাবাহিনী ও ফায়ারকর্মীরা। রাজধানীর খুব জনবহুল এলাকায় মার্কেটটি হওয়াতে আগুন খুব দ্রুত চারদিক ছড়িয়ে পড়ে। কোনো হতাহতের সংখ্যা ও আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি এখনো।
প্রসঙ্গত, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাদের সহযোগিতায় সকাল থেকেই কাজ করেন সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা।
এদিকে, সকালে আগুন লাগার খবর পেয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যে যার মতো করে দোকান থেকে জিনিসপত্র বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। বঙ্গবাজারের আশপাশে সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সকালে আগুনের খবর পেয়ে অনেক ব্যবসায়ী ঘটনাস্থলে এসে আহাজারি শুরু করেন। জিনিসপত্র বের করতে না পেরে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মার্কেটে বিভিন্ন রকমের কাপড় থাকায় আগুনের ব্যাপকতা অনেক বেশি হয়।
ঢাকা বিজনেস/এইচ