পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুবিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র দায়বদ্ধ বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পিলখানায় বীর সেনা সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর অনেকগুলো বছর ধরে জাতি হিসেবে আমাদের নানা বিভ্রান্তিতে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এই নির্মমতার সুবিচার নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধ। তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্যরা একান্ত প্রিয়জন হারানোর এতগুলো বছর পরেও স্বজন হত্যার বিচার পেতে অপেক্ষা করে আছেন। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সমব্যথী হয়ে দেশ ও জনগণ শহীদ পরিবার ও সকল নিপীড়িতের পাশে দাঁড়াবে, একইসঙ্গে সেই আশাবাদ রাখছি।
ড. ইউনূস বলেন, আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস। ২০০৯ সালের এই দিনে পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার সকল শহীদের স্মরণে এখন থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই দিনে আমি গভীর বেদনার সঙ্গে স্মরণ করি ও বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই জাতির সূর্য সন্তান, শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। একইসঙ্গে তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের জানাই সমবেদনা ও সহমর্মিতা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে এই দিনটি আমাদের চেতনা ও অনুভূতির একটি নিয়ামক হয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করার ব্রত নিয়ে পথচলা একদল সাহসী মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত নির্মম মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দেবে। তাদের এই আত্মত্যাগের স্মরণে আমরা জাতি হিসেবে যেন নিজেদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে সংকল্পবদ্ধ হই। দুঃশাসন, ষড়যন্ত্র ও আত্ম-অহংকারে আর যেন কোনো প্রাণ না হারায়। মানুষ যেন আত্মসম্মান ও মানবিক অধিকার নিয়ে নিজের যোগ্যতা ও মেধায় তার প্রাপ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারে এই প্রত্যাশা করি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত পৃথিবী গড়ার পথে বাংলাদেশই যেন হয় আদর্শিক মাপকাঠি। জাতির শহীদ সেনাদের স্মরণে এই দিনে আমরা একটি স্বনির্ভর ও সুসভ্য বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। শহীদ সেনা দিবসে জাতির পক্ষ থেকে আমি আবারও সকল শহীদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।