২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার



কচু চাষে কৃষক হাসে

আনোয়ার হোসেন বুলু, দিনাজপুর || ০২ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:১০ পিএম
কচু চাষে কৃষক হাসে


দিনাজপুরের বিরামপুরে কচু চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন কৃষকেরা। গত বছর ফলন কম হলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। ভালো ফলন ও ভালো দামের কারণে কৃষকের ঘরে ঘরে আজ আনন্দ উপচে পড়ছে। উপজেলার মুকুন্দপুর, কেশবপুর, ফকিরপাড়া, হরেকৃষ্ণপুর, ভবানিপুর, মাহমুদপুর, প্রস্তমপুর সারাঙ্গপুর, চকবসন্ত, মির্জাপুর ও হাবিবপুর গ্রামের মাঠে সবচেয়ে বেশি কচু চাষ হয়েছে।

কেশবপুর গ্রামের কৃষক মো. আবির আলী বলেন, ‘বিঘা প্রতি জমিতে ৭০-৮৫ মণ ফলন কচুর হয়েছে। ১ বিঘা জমিতে খরচ হয় সাড়ে ৩৫ হাজার টাকার মতো । ১০ হাজার টাকার বীজ, পানি ৪ হাজার, নিড়ানি ৬ হাজার, বাঁধানো ৭ হাজার, সার ৬ হাজার, গোবর সার ২ হাজার টাকা। এ ছাড়া মাঠ থেকে ফলন তুলতে প্রতিমনে আরও ২০০ টাকা আর পরিষ্কার করতে ১০০ টাকা খরচ হয়।’

আবির আলী আরও বলেন, ‘আমরা ভ্যানে করে জমি থেকে কচু তুলে বিরামপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করি। বাজারে প্রতিমণ কচু বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১ হজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। এসব কচু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা।’

মাধবপাড়া গ্রামের কৃষক ইমরান আলী বলেন,  ‘আমিএ বছর ৩ বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মণ কচুর ফলন হয়েছে। গত বছর অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম হলেও এবার ভালো হয়েছে।’  

ভবানিপুর গ্রামের কৃষক আহসান কামাল বলেন, ‘আমি ১২ বছর ধরে কচু চাষ করছি। কোনো কোনো বছর বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে ফলন কম-বেশি হয়। এবার খুব ভালো ফলন হয়েছে। ২ বিঘা জমিতে ১৮০ মণ কচু হয়েছে। প্রতিমণ কচু ১ হাজার ৪০০ টাকা বিক্রি করেছি। সবখরচ বাদ দিয়ে প্রতিবিঘায় ১ লাখ টাকার মতো লাভ থাকতে পারে।’ 



আকবর হোসেন নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘প্রতিদিন ১ বিঘা জমি থেকে প্রায় ৫ মণ কচু ওঠানো হয়। এতে ১ হাজার টাকা মজুরি হিসেবে পাই। এলাকায় কচুর আবাদ বেশি হওয়ায় আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। কচু ক্ষেতে কাজ করতে পারছি।’

মহিলা শ্রমিক আকলিমা খাতুন বলেন, ‘জমি থেকে ওঠানো  কচু থেকে মাটি পরিষ্কার করে বিক্রির উপযোগী করি। এতে মণপ্রতি কচুতে ৮০ টাকা মজুরি পাই। এ দিয়েই চলছে সংসার।’

বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ রায় ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘বিরামপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি মাঠের মাটি বেলে-দোআঁশ মিশ্রণ। এসব জমি কচু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তবে আবহাওয়ার কারণে ফলন কোনো কোনো বছর ফলন কিছুটা কম-বেশি হয়। এ কচু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।’

কমল কৃষ্ণ রায়  আরও বলেন, ‘উপজেলায় ১৬০ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ হয়েছে। উপজেলার ৮৫০ জন কৃষক কচু চাষ করেছেন। বেশি চাষ হয়েছে বিলাসি জাতের কচু। এ জাতের কচু প্রতিবিঘা জমিতে ৮০ থেকে ১০০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। এ বছর বিরামপুর উপজেলায় বিভিন্ন প্রজাতির সাড়ে ৪ হাজার মণ কচু উৎপাদন হয়েছে।’ 



আরো পড়ুন