জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে গেছে ফ্রিজ। কাজের ব্যস্ততায় ফ্রিজের ওপর নির্ভরতা এখন অনেকটা। রোজকার ব্যস্ত জীবনে একরকম বাধ্য হয়েই কয়েক দিনের বাজার করে রাখতে হয় ফ্রিজে। তবে অনেকেই জানেন না ফ্রিজে রাখা খাবার অনেক রোগের কারণ। এমনকি গবেষণা থেকে জানা গেছে ফ্রিজের খাবার ইউরিন ইনফেকশনের কারণ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত ইউরিন ইনফেকশনের আক্রান্ত হওয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। গত ৩৫ বছরে ইউরিন ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়া এবং এর ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ২০২৩ সালের সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দূষিত মাংস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় অর্ধ মিলিয়ন ইউরিন ইনফেকশনের কারণ। আর সময়ের সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই।
বেঙ্গালুরুর সিনিয়র কনসালট্যান্ট ইউরোলজিস্ট ডা. সুরি রাজু ভি বলেন, ত্রনালীর সংক্রমণ অর্থাৎ, ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন (ইউটিআই) একটি ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ হয়ে উঠেছে। ই-কোলাই দ্বারা দূষিত মাংস ইউরিন ইনফেকশন সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
সাধারণত মুরগী এবং টার্কি পণ্যে এক্সটেন্ডেড-স্পেকট্রাম বিটা-ল্যাকটামেজ ব্যবহার করা হয়। ঠিকমতো রান্না না করা হলে এর থেকে ই-কোলাই তৈরি হতে পারে। এতে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে, যা পরবর্তীতে রেচনপ্রক্রিয়ায় ছড়িয়ে যায়। সাধারণত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা প্রতি উদাসীনতার কারণে ইউরিন ইনফেকশনের হতে দেখা যায়। তবে সম্প্রতি গবেষণা থেকে ফ্রিজে রাখা খাবারের বিষয়টি সামনে এসেছে।
ডা. সুরি রাজু জানান একটু সচেতন হলেই ইউরিন ইনফেকশন এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। তার জন্য কিছু বিষয় মানতে হবে।
মাংস এবং সবজি বা অন্যান্য খাবারের জন্য আলাদা কাটিং বোর্ড, ছুরি এবং পাত্র ব্যবহার করুন। কাঁচা মাংস কাটার পর ভালোভাবে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
পচনশীল খাবার দীর্ঘদিন হিমায়িত করে রেখে খাবেন না। যেসব খাবার ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে পচনশীল তাদের জমে থাকা অবস্থায় ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
পোল্ট্রি এবং মাংস থেকে ব্যাকটেরিয়াকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার জন্য যথাযথ তাপে এবং ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে।
মাংসের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থেকেই যায়। তাই দীর্ঘসময় মাংস ফ্রিজে না রাখাই ভালো। বেশিদিন কোনো খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।