২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



পিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়

ঢাকা বিজনেস স্পোর্টস ডেস্ক || ২৫ আগস্ট, ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
পিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়


ঐতিহাসিক এক টেস্টজয় দেখলো বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে স্বাগতিক পাকিস্তানকে তারা হারালো ১০ উইকেটে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত পঞ্চপাণ্ডবের একজন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে তিনি খেলেছিলেন ১৯১ রানের এক রাজসিক ইনিংস। 

একেই বলে ক্রিকেট! গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। চতুর্থ দিন শেষে উভয় দলই ছিল সমান সমান অবস্থানে। অথচ কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে অধরা জয় ধরা দিলো টাইগারদের হাতের মুঠোয়। 

পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস শেষে বাংলাদেশের সামনে টার্গে ছিল মাত্র ৩০ রানের। বাংলাদেশ ওই রান করে ফেলে ৬.৩ ওভারে। কোনো উইকেট না হারিয়ে। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারানো অনেকটা স্বপ্নের মতোই। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাদমান অনিক ৯ (১৩ বল) এবং জাকির হাসান ১৫ (২৬ বল) রানে অপরাজিত ছিলেন। 

এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের কোনো রেকর্ড নেই। এজন্যই পিন্ডি টেস্ট জয়কে ঐতিহাসিক আখ্যা দেয়া যায়। তাছাড়া বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয় যে কোনো দেশের জন্যই বিশাল সম্মানের। সবচেয়ে বড় কথা, রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এমন দাপটের সঙ্গে খেলেছেন টাইগাররা যার প্রশংসা না করলেই নয়। 

বলা চলে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইংনিংসের পরই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়। তখন কেবল অপেক্ষার পালা। কারণ বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ৩০ রান। হাতে ১০ উইকেট, দিনের ওভার বাকি ছিল ৫২.১। সুতরাং ধরেই নেওয়া গিয়েছিল, টেস্টে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে হারাতে যাচ্ছে সফরকারী বাংলাদেশ। ম্যাচ যখন শেষ হয়ে গেলো তখনো দিনের খেলা বাকি ছিল আরো ৪৫.৪ ওভারের। 

টেস্টের পঞ্চম দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে গুড়িয়ে দিয়েছেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব আল হাসান পেয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া শরিফুল, হাসান মাহমুদ এবং নাহিদ রানা নিয়েছেন একটি করে উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান এমন হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে এটা কেউ কল্পনাও করেনি। যদিও টাইগার ভক্তরা আশায় ছিলেন এরকম কিছু দেখার।  

জেতার জন্য অনেকটা সরল সমীকরণের সামনে ছিল টাইগাররা। ৩০ রানের টার্গেট বলতে হয় সহজ এবং মামুলি। তবে ভয়ের কারণ ছিল আগের রেকর্ড। এর আগের ১৩ টেস্টে একটা মাত্র ড্র। বাকি ১২ টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। 

৫ম দিনের শুরুতে যেটা কল্পনা করা যায়নি, লাঞ্চের সময় হয়ে গেলো সেটাই। ৬ উইকেটে হারিয়ে ১০৮ রান করে লাঞ্চে যায় পাকিস্তানীরা। তখনো তারা টাইগার ইনিংস থেকে ৯ রান পিছিয়ে। লাঞ্চের পর জলপান বিরতি পর্যন্ত আরো দুই উইকেট হারিয়েছে তারা। পানি বিরতির পর অল্প সময়ের ব্যবধানে পড়েছে বাকি দুই উইকেট। 

দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রান করতে পেরেছিল পাকিস্তান। বাংলাদেশের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রিজওয়ান। তিনি আউট হওয়ায় জয়ের সহজ পথ তৈরি হয়েছে টাইগারদের। ৮০ বলে ৫১ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই অঙ্কের স্কোর করতে পেরেছেন আর মাত্র তিনজন। তারা হলেন আব্দুল্লাহ শফিক (৩৭), শান মাসুদ (১৪) এবং বাবর আজম (২২)।  

টস জিতে বোলিং নিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান ৪৪৮ রান (৬ উইকেট) নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে বাংলাদেশ করেছিল ৫৬৫ রান। ১১৭ রানের লিড নিয়েছিল টিম টাইগার। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ১৪৬ রানে অল আউট হয়ে গেলে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট ছিল ৩০ রানের।  



আরো পড়ুন