২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



৩ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর: দুশ্চিন্তায় টাঙ্গাইলবাসী

আব্দুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || ০৭ জুলাই, ২০২৪, ১১:৩৭ এএম
৩ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর: দুশ্চিন্তায় টাঙ্গাইলবাসী


টাঙ্গাইল জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে রোববার (৭ জুলাই) সকালে জেলার সব নদ-নদীর পানিই বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার, যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  প্লাবিত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকার বাড়ি-ঘর, হাট-বাজার, ফসলি জমিসহ বিস্তির্ণ জনপদ। বাড়ির আঙিনায় ৩ দিন ধরে পানি প্রবেশ করায় ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাবা-মা। 

জেলার ১২টি উপজেলার মধ্য কালিহাতী, গোপালপুর, ভূঞাপুর,মির্জাপুর ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পানির স্রোতে বিভিন্ন হাট বাজার ও রাস্তাঘাট তলিয়ে প্লাবিত।

বাবা রজব আলী বলেন, ‘তিন দিনে পানি বেড়ে ঘরে উঠেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছি ছোট চোট বাচ্চা নিয়ে। একজনকে সবসময়ই কোলে কোলে রাখতে হচ্ছে। অন্য দুজনকেও নজরে নজরে রাখতে হয়। একজনের বয়স মাত্র ৪ বছর,আরেক জনের বয়স ৭। বড়জনের বয়স ১০ বছরের মতো। এদের মধ্য দুজন সাঁতার জানে না। এলাকায় যাদের বাড়িতে পানি উঠেছে, তাদের অনেকেরই নৌকা আছে । আমার নৌকা না থাকায় মাঝে মধ্যে তাদের নৌকা নিয়ে চলাচল করে থাকি।’

রজব আলী বলেন, ‘বাচ্চারা কখন পানিতে পড়ে হাবুডুবু খেয়ে প্রাণ না হারায়, সেই ভয়ে থাকি।  এবারে মনে হচ্ছে সবচেয়ে বড় বন্যা হবে। আমার বাড়িতে পানি ওঠার সময় পানির স্রোতে একটি ঘরসহ আংশিক ভিটেবাড়ি ভেঙে গেছে। আমার বাবা এই যমুনা নদীতে মাছ মেরে সংসার চালাতেন। আমার অন্য কোনো কাজ না থাকায় মাঝে মধ্য মৌসুমে কৃষি কাজ করে থাকি। আবার বন্যার সময় এলেই মাছ মেরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। এবার ছোট বাচ্চার কারণে তাও করতে পারিনি।’

ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল চকদার বলেন, ‘ভূঞাপুর উপজেলার যমুনার পাড়ঘেঁষা বেশির ভাগ অংশই নিম্নাঞ্চল। এতে করে প্রতিবছরই যমুনার নদীর পানি খুব সহজেই লোকালয়ে প্রবেশ করে।’ তিনি বলেন, ‘পানির স্রোতের কারণে এলাকার কয়েকটি কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বন্যাদুর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে সবসময় বন্যা কবলিত এলাকাগুলোয় কঠোর নজরদারি করার জন্য।’

/ঢাকা বিজনেস/ 



আরো পড়ুন