খাদ্যভাণ্ডার খ্যাত দিনাজপুরের ১৩ উপজেলার (হাকিমপুর উপজেলা) মধ্যে শুধু হিলিতেই নেই কোনো অটো রাইস মিল। তাই এখানকার মিল মালিকদের সেকেলে পদ্ধতিতেই ধান সেদ্ধ, শুকানো ও ভাঙাতে হয়। মিল মালিকরা জানান, উদ্যোগের অভাবে হিলিতে অটো রাইস মিল গড়ে উঠছে না। কেউ উদ্যোগ নিলে হতো।
চাতাল শ্রমিক মো. হুমায়ন কবির বলেন, ‘আমরা ১০ জনের শ্রমিকের একটি দল জোটবদ্ধ হয়ে আলতাফ মন্ডলের মিলে ধান সেদ্ধ, শুকনোর কাজ করি। তবে আমাদের সবকাজ করতে হয়, সনাতন পদ্ধতিতে। বয়লারে ধান সেদ্ধ করি, তারপর চাতালে বিছিয়ে দিয়ে কখনো পা দিয়ে, কখনো নিরানী দিয়ে নাড়া দিয়ে ধান শুকাই। শুকানোর পর বস্তাভর্তি করে গুদামজাত করে রাখি।’
চাতাল শ্রমিকেরা জানান, তারা প্রতিবস্তা (৮০ কেজি) ধান শুকানোসহ পুনরায় বস্তা ভর্তি করে গুদামজাত করলে ৬০ টাকা মজুরি পান। রোদ বেশি থাকলে দিনে ৮০ থেকে ১০০ বস্তা ধান শুকানোর পর গুদামজাত করা সম্ভব হয়। এতে প্রতিজন শ্রমিক ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরি পান। কিন্তু রোদ না উঠলে অসল সময় পার করতে হয়।’
মিলের শ্রমিক মো. রহমত আলী বলেন, ‘চাতাল শ্রমিকেরা ধান শুকানোর পর বস্তায় ভরে মিলের পাশে গুদামজাত করে রাখে। পরে আমরা বৈদ্যুতিক চালিত মিলে ধান ভাঙি। মিলের অভ্যন্তরে একজন মিস্ত্রীসহ আমরা ৬ থেকে ৭ জন শ্রমিক কাজ করি। আমাদের মণ প্রতি চুক্তিতে কাজ করতে হয়। এতে আমাদের মজুরিও চাতাল শ্রমিকদের মতোই পড়ে। তবে চাতাল শ্রমিকেরা দিনে ধান শুকায় আর আমাদের রাত জেগে সেই ধান ভাঙতে হয়।’
হিলি মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গণেশ প্রসাদ বলেন, ‘আসলে উদ্যোগের অভাবে হিলিতে অটো রাইস মিল গড়ে উঠছে না। কেউ উদ্যোগ নিলে গড়ে তোলা সম্ভব।’
হিলি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জোসেফ হাসদা ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘হিলিতে ২২টি হাসকিং মিল আছে। তবে কোনো অটো রাইস মিল নেই। হাসকিং মিল মালিকেরা তাদের মিলে চাল ভেঙে খাদ্যগুদামে সরবরাহ করেন।’
ঢাকা বিজনেস/এইচ