ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। তাদের মধ্যে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সাবেক তিনজন বিচারপতিও রয়েছেন। ১৭ পাতার চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে যুক্তরাজ্য। গাজায় ‘সম্ভাব্য গণহত্যার ঝুঁকি’র প্রেক্ষাপটে দেশটিতে অবশ্যই অস্ত্র বিক্রি করা বন্ধ করতে হবে। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাজ্যের তিনজনসহ সাত ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দলের চাপের মুখে আছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এরই মধ্যে তাকে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন ৬ শতাধিক বিশিষ্ট নাগরিক।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাক মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) বলেছেন, অস্ত্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের কাছে ‘খুব সতর্কতামূলক’ একটি ব্যবস্থা রয়েছে। সংবাদপত্র সানের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি ইসরায়েলি ওই হামলার ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান। তবে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করা বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের ব্যাপারে যুক্তরাজ্য ‘অব্যাহতভাবে এই পরিষ্কার’ অবস্থান বজায় রেখেছে যে দেশটিকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলতে হবে।
চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা আরও বলেছেন, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্রশস্ত্র ও অস্ত্রব্যবস্থা (প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) বিক্রি আন্তর্জাতিক আইন মানার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের বাধ্যবাধকতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরও রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি লর্ড সাম্পশন ও লর্ড উইলসন। আছেন আরও নয় জন বিচারক ও ৬৯ জন কেসি।
প্রসঙ্গত, সোমবার (০১ এপ্রিল) গাজার দেইর আল–বালাহ এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) ত্রাণকর্মীদের ওপর বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে প্রাণ যায় সাতজনের। তাদের মধ্যে ফিলিস্তিনি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার দ্বৈত নাগরিক এবং যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও পোল্যান্ডের নাগরিক রয়েছেন। তবে এ হামলাকে ‘গুরুতর ভুল’ বলে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, হামলার ঘটনা ‘স্বাধীনভাবে’ তদন্ত করা হবে।