মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হলো নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর বাংলা বিভাগে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে জুমমিটিং প্ল্যাটফর্মে ওই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রকিবুল হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক জান্নাতুল যূথী।
ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্য রাখছেন অধ্যাপক ড. রকিবুল হাসান
ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক আবদুর রহিম, শিরিনা খাতুন, সাজিয়া হাসান এবং বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সভাপতির বক্তব্যে ড. রকিবুল হাসান বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানে একক বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বাংলা একাডেমির পরিচালক ও বাংলা একাডিম পুরস্কারপ্রাপ্ত গবেষক ড. তপন বাগচীর। কিন্তু তিনি অসুস্থতার কারণে ওয়েবিনারে অংশ নিতে পারেননি। তাই তাঁরই পরামর্শে কবি-গবেষক-কথাশিল্পী ও সাংবাদিক মোহাম্মদ নূরুল হককে আজকের একক বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখার অনুরোধ করলে তিনি সানন্দে রাজি হন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের ভেতর স্বাধীনতার শিক্ষা ও মূল্যবোধ সঞ্চার করার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার প্রকৃত বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নূরুল হক পয়েন্ট ধরে ধরে বলেছেন। তার বক্তব্যের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত।’
ওয়েবিনারে সঞ্চালনা করছেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক জান্নাতুল যূথী
ওয়েবিনারে একক বক্তা হিসেবে অংশ নেন কবি-গবেষক-কথাশিল্পী ও ঢাকা বিজনেস-এর বার্তা সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল হক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে অর্ধশতাব্দী পার হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কত নদীর জল কত সমুদ্রে মিশেছে, তার হিসাব কেউ রাখেনি। সময়ে বয়ে গেছে তার নিয়মে। প্রকৃতিতে নিয়মের রাজত্বেই চলে। আর সবকিছুকে শাসন করতে পারলেও সময়কে কেউ শাসন করতে পারে না। তাই সময় চলে তার নিয়মেই। সময় নিজের নিয়মে চলতে চলতে আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার করেছে। এই অর্ধশতাব্দীকালে একটি প্রজন্মের সিংহভাগ মানুষই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, আরেকটি প্রজন্মের অর্ধেকেরও বার্ধক্যে পৌঁছে গেছেন, আরেকটি প্রজন্ম জীবনের অর্ধেক সময় পার করেছে। আরেকটি প্রজন্ম যৌবনকাল অতিক্রম করছে। আর পঞ্চম প্রজন্ম নিজেকে প্রস্তুত করে তুলছে ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে শাসন করার জন্য। নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য।’
ওয়েবিনারে একক বক্তার বক্তব্য রাখছেন মোহাম্মদ নূরুল হক
মোহাম্মদ নূরুল হক আরও বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম অর্থাৎ পঞ্চম প্রজন্মই মূলত আমার আজকের বক্তব্যের লক্ষ্য। এই প্রজন্ম স্বাধীনতাকে কিভাবে লালন করছে, তা বুঝতে হলে আমাদের রাজনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ব্যবসায়-বাণিজ্য, চাকরি, ভাষাচর্চা, বাক্-স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, পরমত সহিষ্ণুতা, ধর্মীয় সম্প্রীতি, ধৈর্যধারণ, কর্মনিষ্ঠা, পরিশ্রম, সততা, উদ্ভাবনী শক্তি, কল্পনা, সৎচিন্তা, ন্যায়চিন্তা ও সুকুমারবৃত্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।’
ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ
পারিবারিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে মোহাম্মদ নূরুল হক বলেন, ‘এসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হলে প্রথম পরিবার থেকে এরপর সমাজ থেকে তৃতীয় স্তরে শিক্ষাঙ্গন থেকে স্বাধীনতার চেতনা লালনের শিক্ষা দিতে হবে। না হলে নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গুরুত্ব কোনোটাই উপলব্ধি করতে পারবে না। সেই দায়িত্ব আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারক, শিক্ষক ও অভিভাবকদেরই নিতে হবে।’