১৯ মে ২০২৪, রবিবার



সংসারে হাসি এনে দিলো হাঁস

আনোয়ার হোসেন বুলু, দিনাজপুর || ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৮:০২ পিএম
সংসারে হাসি এনে দিলো হাঁস


হাকিমপুর উপজেলার  বোয়ালদাড় গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিন।  পেশায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অফিস সহায়ক। পাশাপাশি নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার।  তিনি হাঁসের খামার থেকে প্রতিবছর ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করেন। এতে তার সংসারে হাসি ফুঠে ওঠে। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) শাহাবুদ্দিনের খামারে তার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।   

শাহাবুদ্দিন জানান, প্রতিবছর তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকার ডিম বিক্রি করেন। তার খামারের সব হাঁস  দেশি জাতের। বর্তমানে  খামারে ৫০টি দেশি জাতের হাঁস আছে। ৫০টির বেশি হাঁস হলেই তিনি বিক্রি করে দেন। সেইসঙ্গে বিক্রি করে দেন হাঁসের ছোট ছোট বাচ্চাও। আর এ থেকেই তিনি বছরে আয় করেন ১ থেকে দেড় লাখ টাকা।  এই খামারি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে  হাঁসগুলোকে ভাতের সঙ্গে ধানের গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে দেই।  এরপর বের করে দেই বাড়ি থেকে। সারাদিন বাড়ির সামনের পুকুরে ও খোলা মাঠে ঘুরে ঘুরে খেয়ে বেড়ায় হাঁসগুলো। আবার দুপুর হলে বাড়িতে এনে আবারও ভাতের সঙ্গে গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়ায়।’ 

শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘দুপুরে খাবারের পর ছেড়ে দেই। সন্ধ্যা পর্যন্ত পুকুরে ও খোলা মাঠে খেয়ে বেড়ায় হাঁসগুলো।  সন্ধ্যায় ঘরে তোলার আগে আরেক দফা ভাত ও গুঁড়ো খাওয়ার পর ঘরে তুলে রাখি।’ তিনি বলেন, ‘আমার নিজের বাড়ির ধানের গুঁড়ো আর ভাত দিয়েই হাঁসের খাবার চালাই। বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। তবে কোনো কোনো সময় রোগ দেখা দিলে ওষুধ কিনতে হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা তানছের আলী বলেন, ‘শাহাবুদ্দিন প্রায় ১০ বছর ধরে নিজের প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন দেশি হাঁসের খামার। চাকরির পাশাপাশি বেশিরভাগ সময় দেন হাঁসের যত্নে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শাহাবুদ্দিন তার হাঁসের খামার থেকে হাঁস, বাচ্চা, ডিম বিক্রি করে প্রতিবছর ২ লাখ টাকা আয় করেন। প্রথমে দু-চারটি হাঁস দিয়ে শুরু  করলেও এখন তার খামারে ৫০টিরও বেশি হাঁস আছে। হাঁসের সংখ্যা বেশি হলেই বিক্রি করে দেন তিনি। ছোট কিছু থেকে যে অনেক বড় কিছু করা যায়, শাহাবুদ্দিন তার জ্বলন্ত প্রমাণ।’ 

প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মেহেরুন নেগার বলেন, ‘শাহাবুদ্দিনের বাড়ি আর আমার বাড়ি পাশাপাশি । আমি দেখি, শাহাবুদ্দিন তার হাঁসের প্রতি খুবই যত্নশীল। স্কুল যাওয়ার আগে হাঁসের খাবার দিয়ে ছেড়ে দেন। তারপর স্কুল যান। আবার দুপুরে টিফিনের সময় এসে হাঁসগুলোকে খাবার দেন। স্কুল ছুটি হলেই তাড়াহুড়ো করে এসে সন্ধ্যার আগেই হাঁস গুলোকে খাবার খাওয়ার পর ঘরে তোলেন।’ 

হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার কাজী মাহবুবুর রহমান ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘হাকিমপুর উপজেলায় বর্তমানে ১২টি হাঁসের খামার আছে। কোনো খামারে হাঁসের অসুখ দেখা দেওয়ার খবর পেলেই অফিস থেকে সংশ্লিষ্টরা সেই খামারে ছুটে যান। খামার মালিকের সঙ্গে  কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। শাহাবুদ্দিনের খামারের ও নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া হয়। তবে শাহাবুদ্দিন কোনোদিন হাঁসের রোগের বিষয়ে অফিসে আসেননি। সমস্যা হলে অবশ্যই আসতেন। এরপরও আমরা নিয়মিত খোঁজ খবর রাখি।’

ঢাকা বিজনেস/এনই



আরো পড়ুন