জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চার অনুষদে শ্রেণীকক্ষ সংকট থাকায় বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। তাই অতিদ্রুত অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে তৃতীয় ধাপে জীববিজ্ঞান অনুষদ, কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর সঙ্গে ১০তলাবিশিষ্ট নতুন প্রশাসনিক ভবনসহ এসব ভবনের প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ধরা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের সংকট নিরসনে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও বিভিন্ন কারণে কাজ শুরু করতে পারেননি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্প অফিসসহ অভ্যন্তরীণ সূত্রমতে জানা গেছে, নির্মাণকাজ শুরুর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এখন কেবল মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষা।
বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনরা তীব্র শ্রেণীকক্ষ সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে দ্রুত ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন। জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. নূহু আলম বলেন, ‘আমাদের সব বিভাগেই শ্রেণীকক্ষ সংকট রয়েছে। এর মধ্যে, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ছয়টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র দু'টি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে। এছাড়া জীববিজ্ঞান অনুষদের কোনো বিভাগের পরীক্ষা-কক্ষ নেই। ফলে যখন পরীক্ষা চলে, তখন শিক্ষার্থীদের ক্লাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।’
নূহু আলম আরও বলেন, ‘জীববিজ্ঞান অনুষদের কোনো বিভাগের সুগঠিত ল্যাব রুম নেই। ফলে শ্রেণীকক্ষের মধ্যেই ল্যাব করতে হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা স্বাভাবিকভাবে দুপুরের আগে ক্লাসগুলো শেষ করি। দুপুরের পর ল্যাব ক্লাসগুলো নেওয়া হয়। এতে ক্লাস রুটিন তৈরি করতেও অনেক কষ্ট হয়।’
কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমাদের অনুষদের নয়টি বিভাগের সবগুলোতেই শ্রেণীকক্ষ সংকট রয়েছে। এছাড়া, কয়েকটি বিভাগে ল্যাব কোর্স থাকলেও তাদের কোনো ল্যাব রুম নেই। তাই অন্য বিভাগের ল্যাব রুম ধার করে কাজ করতে হয়। শ্রেণীকক্ষ সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত শেষ হলেই সংকটের সমাধান হবে।’
দবিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতির জন্য পাঠানো হয়। তারপর কী অবস্থায় আছে, তা জানি না।’
সার্বিক বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষের সংকট নিরসনে সর্বোচ্চ আন্তরিক। ইতোমধ্যে দরপত্র মূল্যায়ন করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতির জন্য পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই দ্রুত ভবন তৈরির কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই প্রশাসনিক ভবনে কষ্ট করে কাজ করেন। তাই প্রশাসনিক ভবন নিয়েও আমরা কাজ করছি।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/