বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন যুগ যুগ বাংলাদেশের উপকূল রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে আসছে। অথচ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উজার হচ্ছে এই বন। বাঘসহ সুন্দরবনের অনেক প্রাণী এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এমন অবস্থায় তৃতীয়বারেরমতো বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাঘ গণনার কাজ শুরু হয়েছে। রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বনের হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রে বাঘ সংরক্ষণ জরিপের উদ্ধোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপ মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে। তাই সুন্দরবন সুরক্ষা করে বাঘ সংরক্ষণ করতে হবে। তাই তৃতীয়বারেরমতো বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাঘ গননার কাজ শুরু হয়েছে।’
প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মহাসিন হোসেন বলেন, ‘পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরনখোলা রেঞ্জের আওতায় প্রাকৃতিক বনে ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় করা হবে ও সুন্দরবনে কতোগুলো বাঘ রয়েছে তার সংখ্যা আগামী বছরের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে ঘোষণা করা হবে।’
ড. আবু নাসের মহাসিন হোসেন আরও বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে প্রথমবার সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ ও জরিপ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৫ সালে সেই জরিপে ১০৬টি বাঘ সুন্দরবনে আছে বলে জানা যায়। এরপর ২০১৮ সালে জরিপ চালিয়ে ১১৪টি বাঘের তথ্য পাওয়া যায়। এখন সে বাঘ কমেছে নাকি বেড়েছে তা জানতে নতুন জরিপ চালানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।’
আগামী বছরের এপ্রিল মাসে এই জরিপ কাজ শেষ হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,‘সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরনখোলা রেঞ্জে ৩০০টি ষ্টেশনে দুটি করে মোট ৬০০ ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। পরে তা বিশ্লেষণ শেষে প্রকৃত সংখ্যা তুলে ধরা হবে। বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পে'র আওতায় বাঘ গণনার কাজে ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।’
ড. আবু নাসের মহাাসিন বলেন, ‘সুন্দরবনে বাঘের শিকার প্রাণী বাড়ছে। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৪২ হাজার। তাই সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।’
বনবিভাগ সুত্র জানিয়েছে, বাঘ গণনার বৈশ্বিক যে পদ্ধতি সেটা হলো ক্যামেরা ট্রাপিং পদ্ধতি। এর মাধ্যমে বাঘের ঘনত্ব নির্ণয় করে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়। বাংলাদেশেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে ৬ হাজার বর্গ কিলোমিটারের ৪ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটারে বাঘ গণনার কাজ চালানো হবে। ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের মুখমন্ডল ও ডোরা কাটার ছাপ উঠে আসবে। এটা জটিল একটা পরিসংখ্যান কাজ। এ কাজ করেই বাঘের সংখ্যা বের করা হবে।
ঢাকা বিজনেস/এমএ/
শেয়ার করুন