২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার



আটক-তল্লাশির ক্ষমতা পাচ্ছে আনসার

স্টাফ রিপোর্টার || ২৩ অক্টোবর, ২০২৩, ০৬:৪০ পিএম
আটক-তল্লাশির ক্ষমতা পাচ্ছে আনসার


জাতীয় সংসদে ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল ২০২৩ উত্থাপন করা হয়েছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপনের প্রস্তাব করেন। 

বিলে অপরাধীকে আটক, দেহ তল্লাশি ও মালামাল জব্দের ক্ষমতা পাচ্ছে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। পাশাপাশি বাহিনীতে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হচ্ছে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি উত্থাপন করলে তিন দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

প্রস্তাবিত বিলের ৮ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে এবং ক্ষেত্রমত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, কোনও স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।

বিলের ২১ ধারায় বিদ্রোহ সংগঠন বা বিদ্রোহ সংগঠনের প্ররোচণায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিলে অপরাধ বিচারের জন্য সংক্ষিপ্ত আনসার আদালত এবং বিশেষ আনসার আদালত নামে দুটি আদালত গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারি বা ব্যাটালিয়ন সদস্যের সম্পত্তি চুরি করা, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে প্যারেডে অনুপস্থিত থাকা, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রদর্শন অপরাধ হিসেবে গণ্য করে চাকরি থেকে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অপসারণের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

 এর আগে জাতীয় পার্টির সদস্য ফখরুল ইমাম বিলটির ওপর আপত্তি জানান। তিনি বলেন, ‌‘পুলিশের সমান্তরাল ক্ষমতা আনসার বাহিনীকে দেওয়া হলে দুটি বাহিনীর মুখোমুখি অবস্থান হয়ে যেতে পারে। ফখরুল ইমাম বিলটি প্রত্যাহারের দাবি জানান। তিনি বলেন, কথায় আছে, বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়। এখানে বাঁশের চেয়ে কঞ্চি শক্ত হয়ে গেছে। পুলিশের কাজটা যদি বিভক্ত এবং সমান্তরাল করা হয় তাহলে কাজটা করা যাবে না। দেশে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর আলাদা আলাদা কাজ আছে। এলিট বাহিনীও করা হয়েছে।’

জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। এতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোতায়েন করতে হলে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যদেরও মোতায়েন করতে হবে। পরে কণ্ঠভোটে ফখরুল ইমামের দাবি নাকচ হয়ে যায়।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ আসলেই আনসার বাহিনীর সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। নির্বাচনের সময় যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রয়োজন পুলিশবাহিনীতে এত পরিমাণ নেই। এই পর্যন্ত ৬ লাখ আনসার নিয়োগ করতে হয়েছে। নির্বাচনের সময় সমপরিমাণ আনসার বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে অগ্নি সন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন দেশ অচল করে দেওয়ার সময় আনসার বাহিনী রাস্তাঘাট পরিষ্কার করেছেন। যানবাহন চলাচলের জন্য নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন।’ 

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পুলিশের সমান্তরাল বাহিনী হিসেবে আনসারকে তৈরির পরিকল্পনা সরকারের নেই। সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার জন্য পাহাড়ে আনসার রয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বাহিনী তৈরির ইচ্ছে নেই। আনসার বাহিনী অনেক কাজ করছে, তাদের একটা আইনের মাধ্যমে পরিচালনার জন্যই আইন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বিলে কোন সাংঘর্ষিক বিধান থাকলে তা সংসদীয় কমিটিতে সংশোধনও হবে বলে জানান মন্ত্রী।’ 

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন