হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আধুনিক টার্মিনাল ভবন নির্মাণ-সম্প্রসারণের কাজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিবি বলেন, ‘বিমানবন্দরে যাত্রীদের উন্নত ও আধুনিক যাত্রী সুবিধা দেওয়াই সরকারের মূল লক্ষ্য। শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালের সফট ওপেনিং উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব বিমানবন্দরে উন্নত প্রযুক্তির নিরাপত্তা-যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে, বিমানবন্দরে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা আগের চেয়ে বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, সমগ্র দেশের আকাশসীমার ওপর সক্রিয় নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা, বিমান পরিচালনায় অধিকতর সুরক্ষিত ও নিরাপদ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্টেট-অব-দ্য-আর্ট-টেকনোলজি সংযোজনের কাজ চলছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি এই টার্মিনাল নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাঁদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অভিবাদন জানাই। ৩য় টার্মিনাল উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের জন্য সময়পোযোগী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের বিমান চলাচল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বোপরি আমরা আধুনিক, নিরাপদ ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত বিমান পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাপান সরকারের জাইকা থেকে ঋণ সহায়তায় ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জায়গার ওপর নির্মিত নতুন টার্মিনাল ভবনটি অত্যাধুনিক, বিশ্বের উন্নত যে কোনো বিমানবন্দরের মতো সৌন্দর্যমণ্ডিত এবং যাত্রীসেবার জন্য সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সংস্থান রয়েছে এতে। এখানে রয়েছে বহুতল বিশিষ্ট কারপার্কিং ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় আমদানি ও রপ্তানি কার্গো ভিলেজ, বিমানের পার্কিং এপ্রোন ও প্যারালাল টেক্সিওয়ের সঙ্গে সংযোগকারী হাইস্পিড টেক্সিওয়ে, গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, বোর্ডিং ব্রিজ, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রসহ নতুন ইউটিলিটি কমপ্লেক্স, ফায়ার ফাইটিং স্টেশন, এয়ারসাইড ও টাউন সাইডে সারফেস রোড নেটওয়ার্ক, মেট্রোরেল স্টেশনের সঙ্গে সংযোগ সাধনের জন্য টানেলসহ আনুষঙ্গিক অত্যাধুনিক অবকাঠামো ও স্থাপনাদি।’
বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাৎসরিক যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা ৮০ লাখ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে প্রতি বছর নতুন করে যাত্রী সেবার আওতায় আসবেন আরও ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী, অর্থাৎ সর্বমোট ২ কোটি যাত্রী। ফলে আন্তর্জাতিক রুটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের আকাশ পথের সঙ্গে যুক্ত হবে। এতে করে, বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে এবং আকাশ পথে দেশের ভবিষ্যৎ এয়ার ট্রাফিক চাহিদা পূরণ ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনের ফলেই আজকে উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। যা দেশের বিমান পরিবহন খাতের আধুনিকায়ন এবং যাত্রী সেবায় আন্তর্জাতিকমান নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বাস্তব প্রতিফলন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্নের ‘‘সোনার বাংলাদেশ’’ তথা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
ঢাকা বিজনেস/এইচ