২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



বর্ষায় হিলিতে বেড়েছে লাকড়ির দাম

আনোয়ার হোসেন বুলু, হিলি (দিনাজপুর) || ১২ আগস্ট, ২০২৩, ০১:০৮ পিএম
বর্ষায় হিলিতে বেড়েছে লাকড়ির দাম


দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে লাকড়ি দাম। শুকানো লাকড়ি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা মণ দরে। আর স’মিলের ভেজা লাকড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। ক্রেতাদের অভিযোগ, কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে বিক্রেতারাও লাকড়ির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এদিকে বিক্রেতাদের দাবি, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে লাকড়ি পাওয়া যায় না। তাই এই সময়ে দাম একটু বাড়ে। 

শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে লাকড়ি ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। 

কথা হয় হিলি পৌরসভার কালীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মো. কবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি নিম্ন আয়ের মানুষ। পান-সিগারেটের দোকান করে সংসার চালাই। আমার পাশ্ববর্তীরা অনেকে গ্যাসের চুলা ব্যবহার করেন। কিন্তু আমার সেই সামর্থ নেই-যে একবারে ১২০০ বা ১৩০০ টাকা দিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডার কিনবো। তাই জ্বালানি হিসেবে খড়িই (লাকড়ি) ব্যবহার করি। প্রতিমাসে ৪ মণ খড়ি লাগে। তাও আবার একবারে কিনি না। প্রতিসপ্তাহে ১ মণ করে কিনি। যেমন আয় তেমন ব্যয় করতে হয়। গত মাসে প্রতিমণ শুকনা খড়ি কিনি ২৫০ টাকা করে। এ মাসে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে কিনতে হলো।’ 

হোটেল ব্যবসায়ী মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘আমার হোটেলে প্রতিদিন ৫ মণ খড়ি লাগে। আমি স’মিলের খড়ি ব্যবহার করি। স’মিলের খড়ি একটু ভেজা থাকে। তবে হোটেলের বড় চুলাতে সামান্য ভেজা থাকলেও জ্বালানো যায়। এক সপ্তাহ আগেও ১৫০ টাকা দরে স’মিলের খড়ি কিনি। আর আজ শনিবার (১২ আগস্ট) ২০০ টাকা মণ দরে কিনতে হলো।’ 

রুবেল মিয়া আরও বলেন, ‘যদিও হোটেলে গ্যাসের চুলাও ব্যবহার করি। তবে ভাত ও তরকারি খড়ির চুলাতেই রান্না করা হয়। আর গ্যাসের চুলায় সাধারণ কোনো তরকারি ঠাণ্ডা হলে গরম করে খরিদ্দারকে তড়িৎ খাবার দেওয়া হয়।’ 

স’মিলের খড়ি বিক্রেতা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এখনতো বর্ষাকাল। তাই মানুষ গাছ কম কাটছে। তাই স’মিলের কাজ অনেক কমে গেছে। আগের কিছু খড়ি ছিল সেসব বিক্রি করছি।’ 

তিনি বলেন, ‘আগেই ১৫০ টাকা মণ দরেই বিক্রি করেছি। কিন্তু একমণ খড়ি শুকিয়ে এখন ৩০ কেজি হয়েছে। তাই ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি। আর স’মিলের খড়ি সাধারণত হোটেল মালিকেরাই বেশি নেয়। কারণ বড় চুলা ছাড়া এসব খড়ি জ্বালনো সম্ভব হবে না। এছাড়া কোনো গাছ স’মিলে ফাঁড়ার পর খড়ি হিসেবে অবশিষ্ট অংশ আর কুড়াল দিয়ে ফাঁড়া যায় না। তাই হোটেল মালিকেরা তাদের বড় চুলাতে এসব স’মিলের খড়ি ব্যবহার করে থাকেন।’ 

শুকনা খড়ি বিক্রেতা জামাল হোসেন ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমার এখান থেকে শুকনা খড়ি কিনে বেশিরভাগ মধ্য ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষ। আমি নবাবগঞ্জ থেকে ২০০ টাকা মণ দরে এসব খড়ি কিনে এনে ২৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন খড়িই পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও পাওয়া যাচ্ছে, দাম বেশি। কিনতেই ২৫০ টাকা মণ পড়ছে। আবার নবাবগঞ্জ থেকে ভ্যান ভাড়া দিয়ে আনতে হয়। অনেক সময় শুকিয়ে ওজন কমে যায়। তাই এখন ৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।’ 

জামাল হোসেন আরও বলেন, ‘৩০০ টাকার নিচে মণ বিক্রি করলে কোনো লাভ থাকবে না। তবে খরার সময় খড়ির সরবরাহ বেশি হলেই দাম আবারও কমে আসবে।’ 

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন