দারিদ্র্যতাও থামাতে পারেনি সুরাইয়াকে। কঠোর পরিশ্রম করে সফল হওয়া যায় তা দেখিয়েছেন তিনি। বাড়িতে পড়ার জায়গা না থাকায় চাচার পাঠাগারে বসে প্রায় সময় পড়ালেখা করতেন। পাশাশাশি দর্জির কাজ, কাঁথা সেলাই ও প্রাইভেট পড়িয়েছেন। এত কাজ করেও এবার এসএসসিতে ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন সুরাইয়া আক্তার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর শহরের সুহাতা এলাকার জীবন মিয়ার মেয়ে সুরাইয়া আক্তার। তিনি এবার উপজেলার ভোলাচং হাই স্কুল থেকে মানবিক শাখায় পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
জানা যায়, সুরাইয়ারা দুই বোন। তিনি বড়, ছোট বোন উম্মে হানি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা জীবন মিয়া পেশায় একজন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক। বাবা প্রায় সময় অসুস্থ থাকেন। মা পারভীন আক্তার গৃহিণী। পাশাপাশি কাঁথা সেলাই করে পরিবার চালান। সুরাইয়া মায়ের সঙ্গে কাঁথা সেলাই করতেন। পাোপাশি দর্জির কাজ ও প্রাইভেট পড়াতেন। চাচা স্বপন মিয়ার প্রতিষ্ঠিত গুঞ্জন পাঠাগারেই প্রায় সময় বসে নিরবে লেখাপড়া করতেন সুরাইয়া। ভবিষ্যৎতে একজন শিক্ষক হতে চান তিনি।
চাচা স্বপন মিয়া বলেন, সুরাইয়াকে কখনোই চাপ দেইনি যে এ প্লাস পেতে হবে। তাকে বলতাম সার্টিফিকেটের এ প্লাস না পেয়ে তোমার নিজের মধ্যে এ প্লাসের যোগ্যতা অর্জন করো। সে সেভাবেই লেখাপড়া করেছে। সুরাইয়া প্রচুর পরিশ্রম করতো, কাজের ফাঁকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা নিয়মিত লেখাপড়া করতো।
তিনি আরও বলেন, পাঠাগারে সাধারণত রাতে ছেলেরা আসতো, সে মেয়ে হয়েও নিজের মতো করে নিরবে বসে পড়ালেখা করতো। তার মধ্যে কোনো দ্বিধা থাকতো না, সে নিজের মতো করেই পড়ার পরিবেশটা তৈরি করে নিতো। আমাদের পরিবার থেকে এই প্রথম কেউ এ প্লাস পেয়েছে, এটি খুব সম্মানের। আমি তার জন্য দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করি। সুরাইয়া যেনো ভবিষ্যৎতে একজন ভালো মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে। সুমাইয়া গুঞ্জন পাঠাগারের আবৃত্তি বিভাগের পরিচালকও।
সুরাইয়া বলেন, আমার চাচা স্বপন মিয়া পড়ালেখার ব্যাপারে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। নিয়মিত ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি। স্কুলের শিক্ষকরা আমার পড়ালেখার খোঁজ-খবর নিতেন। আমি ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হতে চাই, সেজন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।
ঢাকা বিজনেস/এইচ