০২ জুন ২০২৪, রবিবার



চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে শঙ্কা

মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম || ০৫ জুলাই, ২০২৩, ০৬:০৭ পিএম
চট্টগ্রামে বাড়ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে শঙ্কা


চট্টগ্রামে ক্রমাগত  বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর হার। জুলাইয়ের প্রথম পাঁচ দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৭ জন। মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। আর বুধবার  (৫ জুলাই) একদিনেই আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন। এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টরা রোগীদের ডেঙ্গুর ধরন চিহ্নিত করতে পারেননি। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেন।  

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) গত ২২ জুন ডেঙ্গুর জীবাণুবাহক এডিস মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করে।  ড্রোন কিনে ছাদ পর্যবেক্ষণ করে জরিমানাসহ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন খোদ চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর।  এরপরও ডেঙ্গু রোগীর হার বেড়েই চলেছে। 

এ বিষয়ে চসিক মেয়রের কাছে  জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মশক নিধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।  আমরা নগরীর হালিশহর এলাকা থেকে গত ৪ জুলাই এই অভিযান শুরু করেছি।  খুব দ্রুত নগরজুড়ে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু হবে। তখন মশার উপদ্রব কমে যাবে।’

চট্টগ্রাম সিভিস সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৬২৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩ জন।  এরমধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ৪৩২ জন এবং বিভিন্ন উপজেলায় ১৯১ জন।  সময় হিসেবে, জানুয়ারিতে শনাক্ত হয়েছেন ৭৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ১৮ জন, মে মাসে ৫৩ জন, জুনে ২৮২ জন। তবে মারা যাওয়া ১১ জনের মধ্যে ৩ জন জানুয়ারি মাসে এবং জুনে ৬ জন এবং জুলাইয়ে ৪ জন রয়েছে।  

চট্টগ্রাম বিআইটিআইডি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ  বলেন, ‘গত মাস থেকেই রোগী বেড়ে গেছে। হাসপাতালে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবে এখন পর্যন্ত যতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের কারও অবস্থা সংকটাপন্ন হয়নি। আরেকটা বিষয়, এবারে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের রক্তে প্লাটিলেট কম পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে তাদের বেশিরভাগের রক্তচাপও কম।’

ডা. মামুনুর রশীদ আরও বলেন, ‘কোন ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রভাবে এ রকমটা হচ্ছে, তা নিশ্চিত হতে আমরা নমুনা সংগ্রহ করছি। সেই নমুনা ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে। তারা পরীক্ষা করতে দেশের বাইরে পাঠাবেন। এরপরই ডেঙ্গুর ধরন নিশ্চিত হওয়া যাবে।  এছাড়া ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ের সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

চট্টগ্রামের সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামে ডেঙ্গু শনাক্ত ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ মাসের শুরু থেকেই শনাক্তের হার বাড়ছে। বছরের শুরুর দিকের চেয়েও এখন রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। তবে যেসব রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই সময়টাতে এমনিতেই ডেঙ্গু সংক্রমণ বেড়ে যায়। তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উচিত নগরীতে মশক নিধনের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।’ 

ঢাকা বিজনেস/এনই



আরো পড়ুন