২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



যে কারণে হিলির সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা

আনোয়ার হোসেন বুলু, হিলি ( দিনাজপুর) || ২২ মে, ২০২৩, ০৭:৩৫ এএম
যে কারণে হিলির সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা


দিনাজপুরের হিলির সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই স্থানীয় কৃষকদের। তারা বলছেন, সরকারি মূল্যের চেয়ে খোলাবাজারে দাম বেশি। তাই তারা খোলাবাজারের পাইকারদের কাছেই নগদ টাকায় ধান বিক্রি করছেন। ক্রেতারা বাড়ি থেকে ধান নিয়ে যাচ্ছেন। এতে পরিবহণ খরচও বেঁচে যাচ্ছে তাদের। এদিকে, উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা বলছেন, সম্প্রতি কৃষকদের গুদামে ধান দেওয়ার জন্য উন্মুক্ত লটারি করা হয়েছে। তালিকা তৈরির কাজ চলছে।  তালিকা হলে কৃষকেরা গুদামে ধান দেওয়া শুরু করবেন বলে আশা করছেন তারা। 

সরকার চলতি বছরের ৭ মে সারাদেশে একযোগে ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করে। ওই দিন হিলি সরকারি খাদ্যগুদামে মাত্র ১ জন কৃষক ১ টন ধান বিক্রি করেছেন। এরপর কেটে গেছে দুই সপ্তাহ। আর একজন কৃষকও গুদামমুখী হননি।  

উপজেলার আলীহাট গ্রামের কৃষক মো. আকবর আলী বলেন, ‘সরকার প্রতিকেজি ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ প্রতিমণ ( ৪০ কেজি) ধানের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা। এরপর পরিবহণ খরচ আমাদের দিতে হবে। পরিবহণ খরচ দিতে গেলে ধান মণ পড়ছে এক হাজারের সামান্য বেশি। অথচ পাইকাররা আমাদের বাড়ি থেকে ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা মণ দরে। এতে আমাদের পরিবহণ খরচ ও শ্রমিকের খরচ বেঁচে যাচ্ছে।’

জাংগই গ্রামের কৃষক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সরকার ধানের যে দাম নির্ধারণ করেছে, সেই দামে গুদামে ধান না দিয়ে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে বেশি দাম পাচ্ছি। পাইকাররা কোনো  আর্দ্রতা ছাড়াই ধান কিনে নিয়ে  যাচ্ছেন। আর সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে গেলে ১৩ পার্স্টেন্ট আদ্রতা মেপে ধান দিতে হয়। এরপর রয়েছে ধান শুকানোর খরচ, লেবার খরচ, পরিবহণ খরচ। এত ঝামেলার চেয়ে বাড়ি থেকে ধান বিক্রি করে বেশি লাভবান হচ্ছি।’

এই কৃষক আরও বলেন, ‘ধানের আর্দ্রতা ১৩ পার্স্টেন্টে আনতে গেলে প্রতিমণে  (৪০) কেজি ধান শুকিয়ে ৩৭ থেকে ৩৮ কেজি হবে। এতে দাম আরও কমে আসবে। তাই পাইকারদের কাছে দেওয়ায় ভালো।’

হিলি সরকারি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা জোসেফ হাসদা ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘সবেমাত্র যেসব কৃষক সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে পারবেন, তাদের জন্য উন্মুক্ত লটারি করা হয়েছে। তবে তালিকার কাজ এখনো শেষ হয়নি। তালিকার কাজ শেষ হলে হয়তো কৃষকেরা সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দেওয়া শুরু করবেন। আর ধানের বাজারও কমে আসবে।’

জোসেফ হাসদা বলেন, ‘এবার হাকিমপুর উপজেলায় ৩০ টাকা কেজি দরে ৬৪৪ মেট্রিন টন ধান ও ৪৪ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ৩৬৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করবেন।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/




আরো পড়ুন