২৬ জুন ২০২৪, বুধবার
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যেও উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখতে কক্সবাজার সৈকতে ভিড় করেছেন অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ । তাদের সৈকত থেকে সরিয়ে নিতে টহল দিচ্ছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি ও পুলিশ। শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৫টার পর থেকে টহল জোরদার করেছে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু সরিয়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার নেমে যায় মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ‘প্রশাসনের নির্দেশ থাকার পরও কোনো নির্দেশনাই মানছেন না উৎসকু জনতা। বিচকর্মী, লাইফগার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশের নির্দেশনা মানছেন না তারা। উল্টো তর্কে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকেই। শেষমেশ উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দিতে সৈকতে টহল নেমেছে বিজিবি।’
সৈকতের বিচকর্মীদের ইনচার্জ মাহাবুব বলেন, ‘সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০ হাজারের বেশি উৎসুক মানুষ ভিড় করেছে। যারা মোবাইলে লাইভ দেওয়ার পাশাপাশি ছবি তুলছে। আবার অনেকে অহেতুক সমুদ্রের পানিতে নেমে পড়ছেন। বিচকর্মী মাইকিং করলেও কোনো পাত্তাই দেন না উৎসুক জনতা। সচেতন করতে গেলে রেগে মারতে পর্যন্ত উঠছে তারা। এর মধ্যে আবার অনেকে পর্যটকও রয়েছেন।’
সাগরপাড়ে দুপুরের দিকে উৎসুক জনতার ভিড় কম দেখা গেলেও বিকেল না হতেও উৎসুক মানুষের ঢল নামে সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে। কেউ একা নামছেন সৈকতে, আবার কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে এসেছেন, আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে নেমে পড়ছেন সাগরপাড়ে। সৈকতে আসা বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে সাগরের ঢেউ কেমন হয় তা দেখতে এসেছি। তবে কিছুক্ষণ পর চলে যাবো।’
সমাজকর্মী রোমান উদ্দিন বলেন, ‘সৈকতে আসলে কেউই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমুদ্রে নামতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। এসময় আমাদের সবাইকে সচেতনতা অবলম্বন করে, নিরাপদে থাকা উচিত।’
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আইন অনুষদের ছাত্র তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন তুলে দেওয়ার একটু পর আবারও সমুদ্রে নেমে যাচ্ছে মানুষ। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতকেও কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না। আবহাওয়া খারাপের দিকে যাচ্ছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ সময় সৈকতে অবস্থান না করে ঘরে থাকাটাই নিরাপদ।’
সি সেফ লাইফগার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ ওসমান বলেন, ‘মানুষ কোনোভাবেই নিষেধ মানছে না। বারবার বলেও উল্টো তর্কে জড়িয়ে পড়ছে মানুষ। তারপরও চেষ্টা করছি,মানুষকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার জন্য।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে কক্সবাজারে। এই জন্যে লোকজনদের সৈকতে নামার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সৈকতের সব কার্যক্রম। এরপরও অনেকে নামছে সৈকতে। সৈকত থেকে পর্যটকসহ স্থানীয়দের বারবার উঠিয়ে দেওয়ার পরও কেউ তা মানছে না৷ তুলে দেওয়ার একটু পর আবারও সৈকতে নামছে তারা। এজন্যে কঠোরভাবে লোকজনদের বলা হচ্ছে যেন সৈকতে না নামেন। পাশাপাশি বলা হচ্ছে নিরাপদে আশ্রয় নিতে।’
ঢাকা বিজনেস/এনই
