১৮ মে ২০২৪, শনিবার



রাজশাহীতে বিঘায় সাড়ে ২৮ মণ ফলছে ব্রি-৯২ ধান

ফেরদৌস সিদ্দিকী, রাজশাহী || ০৮ মে, ২০২৩, ১০:০৫ পিএম
রাজশাহীতে বিঘায় সাড়ে ২৮ মণ ফলছে ব্রি-৯২ ধান


বরেন্দ্রখ্যাত রাজশাহী অঞ্চলে বিঘা প্রতি সাড়ে ২৮ মণ ব্রি-৯২ ধানের ফলন হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় খরা সহিষ্ণু ও পানি সাশ্রয়ী এই জাতের ধান জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ অঞ্চলে।  

চলতি বোরো মৌসুমে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ধোকড়াকুল এলাকায় ১১০ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছে উচ্চফলনশীল এই ধান। সরিষা তুলে সেই জমিতে চাষ হচ্ছে ব্রি-৯২ ধান। ধান তুলে চাষ হবে সবুজ সার ধইঞ্চা। আর এই উদ্যোগে সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) রাজশাহী আঞ্চলিক কেন্দ্র। 

এখন খেত ভরে গেছে পাকা ধানে। সোমবার (৮ মে) কৃষকের খেতে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটার উদ্বোধন করেন ব্রি মহাপচিালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। এসময় তিনি বলেন, ‌‘ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে। কেননা বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার, দেশে কোনো পতিত জমি থাকবে না। যেখানে জমি আছে, সেখানে চাষাবাদ করা হবে।’ 

ব্রি মহাপচিালক আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে যত ধরনের ধান উদ্ভাবন হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৯২। সবচেয়ে ভালো এবং ফলন প্রায় সাড়ে ২৮ মণ। এই ধান হেলে পড়ে না। চিকন জাতের ধান বাজারে দামও বেশি, মানুষ খেতে পছন্দ করে।’ 

রাজশাহীর পুঠিয়ায় প্রথমবারের মতো ব্রি ধান-৯২ চাষ করা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ১০ থেকে ১২ দিন আগেই এই ধান কাটা যাবে। 

জানা যায়, ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশের হাওর ও সমতল এলাকায় চাষ হচ্ছে ব্রি ধান ৯২। এ জাতের ধানের পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৭ সেন্টিমিটার। গাছের কান্ড শক্ত বিধায় ঢলে পড়ে না। ফলে কৃষকেরা বাড়তি হিসেবে খড়ের দাম ষোলআনা পেয়ে থাকেন। ধানের দানা লম্বা ও জিরা কিংবা ব্রি ধান ২৮ এর মতো চিকন। পাতা হালকা সবুজ, ডিগপাতা খাড়া এবং ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে প্রশস্ত। পাকার সময় কান্ড ও পাতা সবুজ থাকায় সহরজই যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাটা যায়। শ্রমিক খরচেও সাশ্রয় হয় বেশ।

ব্রি রাজশাহী অঞ্চলের অফিস প্রধান ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ফজলুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী অঞ্চল যেহেতু খরাপ্রবণ এলাকা, তাই খরাপ্রবণ এলাকায় চাষাবাদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী ধান ব্রি-৯২। ফলন প্রায় ২৮ মণ হারে পাচ্ছেন কৃষকরা। পুঠিয়ার এই মাঠে একসঙ্গে বীজতলা তৈরি, রোপণ ও আজ কাটা হচ্ছে ১১০ বিঘা জমির ধান।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এই ধান কাটার পর জমিতে বোনা হবে সরিষা। এরপর করা হবে আমন ধান, তারপর আবার সরিষা অর্থ্যাৎ একই জমিতে বছরে চার ফলন পাবেন কৃষকরা। কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারেন, সে জন্যই কৃষির সব বিভাগ একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এই ধানের বীজ বিএডিসি কিংবা আমাদের ব্রি অফিস থেকেও সংগ্রহ করতে পারবেন কৃষকরা।’

ড. মো. ফজলুল ইসলামের সভাপতিত্বে বোরো-ধইঞ্চা-রোপা আমন এবং সরিষা চাষের এই ক্রপিং প্যাটার্ন নিয়ে মাঠ দিবসে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শামছুল ওয়াদুদ এবং জেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোজদার হোসেনসহ স্থানীয় কৃষকরা।

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন