ঈদের ছুটিতে মনকে রাঙিয়ে তুলতে, প্রশান্তির স্বাদ নিতে বেড়িয়ে আসুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সুনামগঞ্জ জেলায়। দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা এ জেলায় দেখতে পাবেন এখানকার ঐতিহাসিক স্থাপনা, বাউল সাধকের বাড়ি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, হাওর, নদী, পাহাড়, ঝরনা। ঈদের টানা ছুটিতে এখানে ঘুরে পাবেন প্রশান্তি।
তাহিরপুর উপজেলায় রয়েছে মাদার ফিসারিজ খ্যাত টাংগুয়ার হাওর, সীমান্ত ঘেঁষা ৩০০ ফুট উচ্চতার বারেক টিলা, উপজাতিদের মন্দির, মেঘালয় পাহাড়ের জলপ্রপাত, শাহ আরফিন (রা) আস্তানা, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পণর্তীথস্থান, উঁচুনিচু পাহাড়ের সারি, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প, সীমান্ত লেক, ৩টি শুল্ক স্টেশন (চারাগাঁও, বড়ছড়া, বাগলী), লাকমাছড়া, ছোট-বড় ২০টি পাহাড়ি ছড়া, রাজা উইক্লিবস এর বাড়ি, আওলী জমিদার বাড়ি, পাহাড়ি যাদুকাটা নদী, ঝরনা। আরও রয়েছে মেঘ, বৃষ্টি, উপজাতি ও বাংলাদেশিদের একত্রে বসবাসের এক মিলনমেলা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলায়।
জেলার দোয়ারা বাজার উপজেলায় রয়েছে বাঁশতলা, হকনগর শহীদ স্মৃতিসৌধ, জুমগাঁও আদিবাসীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। জেলা শহরে রয়েছে মরমী কবি সাধক হাসন রাজা মিউজিয়াম ও কবর। জেলার দিরাই উপজেলার ধল গ্রামে রয়েছে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের নিজ বাড়িতে কবর ও তার ব্যবহারের জিনিসপত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বছরের দুটি প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ছাড়াও সারাবছরই পর্যটকে ভরপুর থাকে এখানে। আত্মতৃপ্তির টানে আসছেন দেশি-বিদেশি হাজার হাজার দর্শনার্থী। অনেকেই ওসব স্থানে গিয়ে তুলছেন সেলফি আর অনেকেই একান্তে বসে আছেন, আবার অনেকেই বসিয়েছেন খুশির আড্ডা। কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ সিএনজি, কেউ স্পিডবোর্টে, আবার কেউ ইঞ্জিনচালিত নৌকায় দল বেঁধে ছুটছেন।
এ উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী রায়হান কবির, জসিম উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, টাংগুয়ার হাওর, বারেকটিলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্পটগুলো দেখতে খুর ভালো লাগে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত নয়, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নেই, ফলে পর্যটকদের এখানে বেড়াতে আসা কষ্টকর হয়।
তাহিরপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম আখঞ্জি বলেন, ‘উপজেলায় আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উপযোগী স্থান রয়েছে কিন্তু আজও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হলে তাহিরপুরের স্থানীয় জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সুযোগ ও স্থানীয় বেকার যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
যেভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের বাস আছে সুনামগঞ্জ জেলা পর্যন্ত। তারপর সিএনজি, লেগুনা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল পাওয়া যায় তাহিরপুর উপজেলায়। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে যাওয়ার সুবিধা রয়েছে।
ঢাকা বিজনেস/এইচ