২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



জানা-অজানা
প্রিন্ট

পরীক্ষার পাস নম্বর ৩৩ কেন

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ১২ এপ্রিল, ২০২৩, ০২:০৪ পিএম
পরীক্ষার পাস নম্বর ৩৩ কেন


স্কুল-কলেজে পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীর মুখে এই কথা শোনা যায়, 'কোনোভাবে ৩৩ পেলেই হবে। আর কিছু লাগবে না।' অর্থাৎ, পাস করতে পারলেই হলো। আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে কলেজ পর্যন্ত সব ক্লাসেই উত্তীর্ণ হতে পরীক্ষায় পেতে হবে ৩৩ নম্বর। ৩৩ এর কম পেলেই কপালে জুটবে ফেলের তকমা। 

পরীক্ষায় ৩৩ নম্বর পান বা না পান, কখনো কি এই  প্রশ্ন এসেছে যে কেন ৩৩ নম্বরই পেতে হবে। বেশি বা কম কেন নয়? কেন সব বিষয়ে ৩৩% নম্বর পেলেই পরের ক্লাসে ভর্তি হতে পারেন? 

জানলে অবাক হবেন যে, শুধু আমাদের দেশেই নয়, ভারত ও পাকিস্তানেও শিক্ষার্থীদের পাস করতে ৩৩% নম্বর পেতে হয়। বলা যায় পাসের নম্বর ৩৩% আমাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। 

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ব্রিটিশরা ঘাঁটি গড়ে উপমহাদেশে। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহে জয়ের পর তারা পুরোপুরি রাজত্ব শুরু করে।  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বদলে সরাসরি ভারত শাসনের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রিটিশরাজ। ১৮৫৮ সালে প্রথমবারের মতো উপমহাদেশে মেট্রিক পরীক্ষা চালু হয়। কিন্তু পাস নম্বর কত হবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্তের জন্য দ্বারস্থ হন ব্রিটিশদের কাছে। ব্রিটিশ লর্ডদের পরামর্শ চান তারা। ব্রিটেনে তখন পাস নম্বর ছিল ৬৫। অর্থাৎ, ১০০ তে ৬৫ নম্বরের কম পেলে পরীক্ষায় অকৃতকার্য বিবেচনা করা হতো। 

এদিকে ব্রিটিশ লর্ডরা মনে করতেন, উপমহাদেশের লোকের জ্ঞান ও বুদ্ধির মাত্রা ব্রিটিশদের তুলনায় অনেক নিচে, বড়জোর ব্রিটিশদের অর্ধেক হতে পারে। ফলে পাসমার্ক হবে ৬৫ এর অর্ধেক ৩২.৫।

পরবর্তীতে ১৮৬১ সালে, হিসাবের সুবিধার জন্য ৩২.৫ কে বদলে ৩৩ করা হয়েছে। এরপর কেটে গেলো প্রায় ১৬০ বছর। কিন্তু কেউ এই বিষয় নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেনি। উপনিবেশক এই নিয়ম পরিবর্তন করারও চেষ্টা করেনি। এত বছর পরও ব্রিটিশদের নিয়মেই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

ঢাকা বিজনেস/এন/



আরো পড়ুন