২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার



‘বঙ্গবন্ধু স্বল্পতম সময়ে জাতিকে শাসনতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন’

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ০৮ এপ্রিল, ২০২৩, ০১:৩৪ পিএম
‘বঙ্গবন্ধু স্বল্পতম সময়ে জাতিকে শাসনতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন’


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অবিচল ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা। তারা বলেন,  বঙ্গবন্ধু স্বল্পতম সময়ে মাত্র ৭ মাসে জাতিকে শাসনতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তান তা ২৫ বছরেও পারেনি। ভারত শাসনতন্ত্র প্রণয়নে নিয়েছিল তিন বছর। যুক্তরাষ্ট্রের লেগেছিল ৫ বছর ৯ মাস। শনিবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার ৭ এপ্রিলের প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনাকালে তারা এসব কথা বলেন। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সংসদের পথচলা বার বার হোঁচট খেয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংসদ বাতিল করা হয়েছিল। সংসদীয় গণতন্ত্র বাতিল করে তখন সামরিকতন্ত্র চালু করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে সংসদ নির্বাচনের পর প্রকৃতপক্ষে মার্শাল ডেমোক্রেসি চালু করেছিলেন। যে ব্যক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, যে ব্যক্তি পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের ডেপুটি লিডার হিসেবে জাতিসংঘে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে কোন গণহত্যা হচ্ছে না, ভারতীয় চররা, ভারতের দোসররা কিছু গন্ডগোল করছে মাত্র’ওই নির্বাচনের পর  তাকেই সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী বানানো হয়েছিল।’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘‘আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবো, তবে যারা ৭১, ৭৫ এবং ২০০৪ সালে হত্যাকাণ্ডের  সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের প্রতিহত করতে হবে।’’   

ময়মনসিংহ-৬ আসনের সদস্য মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘গণপরিষদ নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অবিচল ছিলেন। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশের জন্য একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করেন। মাত্র ৭ মাসে তিনি জাতিকে শাসনতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন। পাকিস্তান তা ২৫ বছরেও পারেনি, ভারত তাদের শাসনতন্ত্র প্রণয়নে নিয়েছিল ৩ বছর।’ 

নওগাঁ-৪ আসনের সদস্য মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ট নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। জাতির পিতা ছিলেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবিচল। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বের কোন দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা নেই। কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেননি। 

আলোচনায় অংশ নিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্জনের জন্য ২৩ বছর বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। 

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা। তিনি ওই সময়ে উপলব্ধি করেছিলেন কৃষি ও শিল্প খাতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন করতে হবে। তার সময়োচিত সিদ্ধান্তে তিতাস, হবিগঞ্জ, কৈলাসটিলা, বাখরাবাদ ও রশিদপুর-এ পাঁচ গ্যাসক্ষেত্র ক্রয়ে ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট চুক্তি সই হয়। বঙ্গবন্ধু গ্যাসক্ষেত্রগুলো কিনে রাষ্ট্রীয়করণ করেন। এখনো দেশীয় কোম্পানির সরবরাহকৃত গ্যাসের ৮২ শতাংশ যোগান দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কেনা এ ৫টি গ্যাসক্ষেত্র। 

জাসদের হাসানুল হক ইনু বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শাসনতন্ত্র ও সার্বভৌম সংসদের প্রতিষ্ঠাতা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে শাসনতন্ত্রকে কাটছাঁট করে এই সার্বভৌম সংসদকে অকার্যকর করেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শাসনতন্ত্র ও গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে সার্বভৌম সংসদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনেন। 

ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর পথচলা মসৃণ ছিল না। বারবার এই সংসদ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, সংসদকে অকার্যক্রর ও ঠুটু জগন্নাথে পরিণত করা হয়েছে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে খন্দকার মোশতাক এই সংসদকে দিয়ে নিজের ক্ষমতা বৈধ করার অপচেষ্টা করেছে। জিয়া কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে এই সংসদকে কলঙ্কিত করেছে। এভাবে বিভিন্ন সময়ে দেশের শাসনতন্ত্র ও সার্বভৌম সংসদকে ক্ষত-বিক্ষত করার চেষ্টা হয়েছে।    

আলোচনায় আরও অংশ নিয়েছেন শাজাহান খান, মো. আব্দুস শহীদ, আ স ম ফিরোজ, আবুল কালাম আজাদ, সিমিন হোসেন রিমি, মো. সাইফুজ্জামান, নাহিম রাজ্জাক, সৈয়দা জাকিয়া নুর, তানভীর শাকিল জয়, বেগম হাবিবা রহমান খান, জাতীয় পার্টির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বেগম রওশন আরা মান্নান ও মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রমুখ। সূত্র: বাসস

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন