২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



আরও বাড়তে পারে গম-চালের দাম: বিশ্বব্যাংক

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ১৮ মার্চ, ২০২৩, ১২:০৩ পিএম
আরও বাড়তে পারে গম-চালের দাম: বিশ্বব্যাংক


বিশ্ববাজারে গম-চালের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক এই আর্থিক সংস্থা বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের দামে যে ঊর্ধ্বগতির সূচনা হয়েছিল, এক বছরে তা কিছুটা কমে এসেছে। তবে,নতুন কোনো ধাক্কায়  আবারও  বেড়ে যেতে পারে।‘ 

বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, ‘রুশ বাহিনী ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর বন্দর অবরোধ করে দেশটির গমের চালান বন্ধ করে দেয়। এতে খাদ্যের দামও বেড়ে যায়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অনেক দেশ অভ্যন্তরীণ খাদ্য সরবরাহ অব্যহত রাখার জন্য খাদ্য ও সার রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এসব পদক্ষেপের কারণে কেবল খাদ্যের দামই বাড়িয়ে দেয়। খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বল্প সময়ের জন্য খাদ্য সংকটের হুমকি দেখা দেয়।’ 

বিশ্বব্যাংক বলছে, এখন অবশ্য সেই পদক্ষেপের অনেকগুলোই আর কার্যকর নেই। এই উচ্চমূল্য মূলত বিস্তৃত বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রতিফলন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভুট্টার গড় মূল্য ২০২১ সালের জানুয়ারির তুলনায় ৩১ শতাংশ বেশি ছিল।  গমের মূল্য ১৪ শতাংশ বেশি ছিল।  চালের মূল্য  ২ শতাংশ কম ছিল।  এরপরও, অবশিষ্ট বিধিনিষেধগুলোও সংকট সৃষ্টি করছে। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার একবছর পর কোটা, লাইসেন্স ও সরাসরি নিষেধাজ্ঞাসহ ১০১টি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। 

বিশ্বব্যাংকের মতে, এগুলো ডব্লিউটিও নীতির পরিপন্থী। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ২০২২ সালের খাদ্য বাণিজ্যের ১১ শতাংশেরও বেশির ওপর প্রভাব ফেলে। শুধু রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাগুলোই বিশ্বব্যাপী খাদ্য বাণিজ্যে ৩.৮ শতাংশ পর্যন্ত প্রভাব ফেলে। বিশ্বব্যাংক  আরও জানায়, এই যুদ্ধের ফলে খাদ্যমূল্য ৫২.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।  ২০২২ সালের প্রথমার্ধে রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা এই মূল্যবৃদ্ধির এক চতুর্থাংশের জন্য দায়ী। দেশটি বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ গমের সরবরাহ করে। অন্যান্য রপ্তানিকারকরা বৈশ্বিক গমের ৩৪.৫ শতাংশ চালান দেয়। বৈশ্বিক গম রপ্তানির ৫.২ শতাংশ চালানের ওপর নিষেধাজ্ঞা সার্বিক গমের ১৬.৭ শতাংশ  মূল্যবৃদ্ধির তিন চতুর্থাংশেরও বেশির জন্য দায়ী।

তবে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক বলছে, ওই বছরের ২২ জুলাই ইউক্রেন, রাশিয়া, তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যে একটি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের তিনটি বন্দর থেকে খাদ্য রপ্তানি পুনরায় শুরু হয়। চুক্তিটির আওতায় রাশিয়া ও অন্য প্রধান তিন গম উৎপাদনকারী দেশ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। এর পাশাপাশি গ্রীষ্ম মৌসুমে শস্যের আবাদ ভালো হওয়ায় বিশ্ব বাজারে খাদ্যের মূল্য হ্রাসে সহায়ক হয়। ওই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া রপ্তানি বাড়ায়। এর ফলে কানাডার রপ্তানি কমে যায়। 

মার্কিন কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত ১২ মাসে বিশ্ব খাদ্য বাণিজ্য ৫ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে এই সময়ে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের চাল রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের অন্য এই প্রধান খাদ্যটির রপ্তানি ৪.৫ শতাংশ বেড়েছে। অধিকন্তু ভারতও চাল রপ্তানি বাড়িয়ে দেয়। 

বিশ্বব্যাংক বলছে যে, অনুরূপভাবে ভুট্টা অথবা গম রপ্তানিকারক শীর্ষ তিন দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিশ্ববাজারে ভুট্টার দাম ৪৪ শতাংশ ও গমের দাম ৮ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। এভাবে খাদ্যমূল্যে আরও বৃদ্ধি পেলে, নিম্ন ও নিম্নমধ্য আয়ের দেশগুলো সংকটে পড়বে। যারা রপ্তানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন