দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এ বিদায়ী সপ্তাহে (১৯ ফেব্রুয়ারি-২৩ ফেব্রুয়ারি) লেনদেন কমেছে। পাশাপাশি এই সময়ে সবধরনেরা সূচকও কমেছে। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯২ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার ৩০৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১১১ কোটি ১৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ১৮ কোটি ৬৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৩৪ টাকা। শতাংশের হিসাবে ৪৮ দশমিক ২৫ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৭৩ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ৭৬ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪২২ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৬৮ টাকা। এক্ষেত্রেও সপ্তাহের ব্যবধানে গড়ে লেনদেন কমেছে ১৪৯ কোটি ১১ লাখ ১৩ হাজার ৬৯২ টাকা। ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
জানা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরি কোম্পানির মোট লেনদেন হয়েছে ৭১১ কোটি ৭৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। আর এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৪৩৬ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ৭২৫ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। ‘বি’ ক্যাটাগরি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে বিদায়ী সপ্তাহে ১৯৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪২৭ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা। ‘এন’ ক্যাটাগরি কোম্পানির মোট লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ২৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ২ কোটি ২১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। আর সর্বশেষ ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে বিদায়ী সপ্তাহে ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ কোটি ৯৪ লাখ ১২ হাজার টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
এদিকে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই’র পি/ই রেশীয় বা মূল্য আয় অনুপাত ছিল ১৪ দশমিক ৩২ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৪ দশমিক ৩৮ টাকা পয়েন্ট। মোট ৪০০ কোম্পানির লেনদেন হয়েছে বিদায়ী সপ্তাহে। যার মধ্যে লেনদেন কমেছে ১৫৩ কোম্পানির, অপরিবর্তিত ছিল ১৮২টি কোম্পানির, লেনদেন বেড়েছে মাত্র ১৫টি কোম্পানির। আর লেনদেন হয়নি ৫০টি কোম্পানির। এর আগের সপ্তাহেও ৪০০ কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ১৫১ টি কোম্পানির লেনদেন কমেছে, লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ১৯৭ টি কোম্পানির এবং লেনদেন বেড়েছে ২৭ কোটি। আর লেনদেন হয়নি ২৫টি কোম্পানির।
ডিএসই সূত্র আরও বলছে, বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) ছিল ৬ হাজার ২০৫ দশমিক ১২ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৬ হাজার ২৪৬ দশমিক ২১ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে সূচক কমেছে ৪১ দশমিক ০৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ ০ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট শতাংশ।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইএক্স শরিয়াহ্ সূচক(ডিএসইএস) ছিল ১ হাজার ৩৫৫ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৩৬৬ দশমিক ৬২ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে পয়েন্ট কমেছে ১০ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ ০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এদিকে ডিএসই ৩০ সূচকও কমেছে। বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসই৩০ সূচক ছিল ২ হাজার ২২১ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ হাজার ২২৪ দশমিক ২০ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে পয়েন্ট কমেছে ২ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। আর্থাৎ ০.১৩ শতাংশ কমেছে।
জানা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধনও কমেছে। বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬২ হাজার ২২৬ কোটি ৯৮ লাখ ৩১ হাজার ১৪৮ টাকা। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি ৬৯ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ টাকা। এক্ষেত্রে বাজার মূলধন কমেছে ০ দশমিক ২১ শতাংশ।
এদিকে, বিদায়ী সপ্তাহে টপ টেন গেইনারের তালিকায় ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ছিল ৮টি এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ছিল ২টি। এছাড়া, টপটেন লুজারের তালিকায় ছিল ৭টি ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ছিল ৩টি। বিদায়ী সপ্তাহে টপটেন গেইনারের শীর্ষে ছিল আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ফান্ডটির বিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ৬৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৭৫০ টাকা। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রুপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। কোম্পানিটির মোট লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা। তালিকার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মন্নো এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারি লিমিটিড। কোম্পানিটির বিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৫৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৮৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫০০ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে টপটেন লুজারের শীর্ষ তিন কোম্পানি হলো বাংলাদেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড এবং এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড। বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মোট লেনদেন হয়েছে ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের মোট লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের মোট লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
ঢাকা বিজনেস/তারেক/এনই/