০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার



১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:১১ এএম
১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি


গত এক দশকে মার্কিন মুল্লুকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। এমন তথ্য জানা গেছে দেশটির অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড গার্মেন্টসের (ওটেক্সার) এক প্রতিবেদনে। 

সেখানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করে এমন দশটি দেশের মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন, পরের অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। মূলত গত এক দশকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।

এ সময়ে বাংলাদেশ তার সাশ্রয়ী উৎপাদন ক্ষমতা, উচ্চ মানসম্পন্ন পোশাক এবং দক্ষ শ্রমশক্তির মাধ্যমে ভারতের মতো দেশকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে।

ওটেক্সার আরও দেখা যায়, মার্কিন মুল্লুকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। তবে ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত (১০ বছর) যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ওই পরিসংখ্যান মতে, চীন প্রথম অবস্থানে থাকলেও এক দশকে তাদের পোশাক শিল্পের রপ্তানি কমেছে প্রায় অর্ধেক। আর সে জায়গায় বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। একইসঙ্গে ভারত, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোরও রপ্তানিও বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড গার্মেন্টসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৪.৮৩ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২২ সালে এই রপ্তানি উন্নীত হয় ৯.৭৩ বিলিয়ন ডলারে। অবশ্য ২০২৩ সালে আকস্মিকভাবে এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রায় এক চতুর্থাংশ হ্রাস পেয়ে রপ্তানি দাঁড়ায় ৭.২৯ বিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি হ্রাস পেয়েছিল ২২.০৪ শতাংশ, যার প্রভাবটাই মূলত পড়েছিল বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ওপর। তবে সার্বিকভাবে ওই দশকে (২০১৪ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত) যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫০.৭৯ শতাংশ।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে প্রথম অবস্থানে থাকা চীনের ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ছিল ২৯.৭৯ বিলিয়ন ডলার। সেখানে ২০২৩ সালে এই রপ্তানি হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৬.৩২ বিলিয়ন ডলারে।

অর্থাৎ এক দশকের মধ্যে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৪৫.২৪ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ছিল ৯.২৭ বিলিয়ন ডলার। সেখানে ২০২৩ সালে এই রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.১৮ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের রপ্তানি বেড়েছে ৫২.৯৬ শতাংশ।

ওটেক্সার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পোশাক রপ্তানি ছিল ৩ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে এই রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৬৯ বিলিয়ন ডলারে। আর ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের পোশাক রপ্তানি ছিল ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.০২ বিলিয়ন ডলারে।

যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার পোশাক রপ্তানি গত এক দশকে বেড়েছে ৩৩.৯৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে যেখানে দেশটির রপ্তানি ছিল ২.৪৮ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২৩ সালে এই রপ্তানি উন্নীত হয় ৩.৩২ বিলিয়ন ডলারে।

তবে গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে চীনের পাশাপাশি হ্রাস পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস এবং ইন্দোনেশিয়ার পোশাক রপ্তানিও।

এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি ১৩.৩১ শতাংশ, মেক্সিকোর ২৪.৬৬ শতাংশ, হন্ডুরাসের ৬.০৮ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ১৭.৯৯ শতাংশ।



আরো পড়ুন