২৬ জুন ২০২৪, বুধবার
গরুর গোবর সাধারণত জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে জমির উর্বর শক্তি বাড়ে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, লাকড়িসহ রান্নার কাাজে ব্যবহৃত অন্যান্য জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দিনাজপুরের হিলির গৃহবধূরা গরুর গোবর থেকে জ্বালানি তৈরি করছেন।
গ্রামের গৃহবধূরা বলছেন, জমিতে প্রয়োগের পর অবশিষ্ট গোবর দিয়ে আমরা জ্বালানি তৈরি করি। আমাদের চাষ করার মতো জমি নেই। তাই গৃহপালিত গরুর গোবর দিয়ে জ্বালানি তৈরি করি। বাড়িতে গ্যাস বা বিদ্যুৎ না থাকলে এসব জ্বালানি হিসেবে রান্না-বান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়।
হিলির মধ্যবাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা আকলিমা বেগম বলেন, আমাদের দুটি গাভী আছে। কিন্তু চাষ করার জমি নেই। তাই গোবরগুলো দিয়ে জ্বালানি তৈরি করি। প্রতিদিন সকালে গোয়ালঘর পরিষ্কার করি। গোবরগুলো একত্রিত করে পাশের দেওয়ালে হাতের ছাপের মতো করে লাগিয়ে রাখি। রোদ ভালো হলে দুই থেকে তিন দিনে শুকিয়ে যায়। পরে চুলায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। জ্বলেও ভালো।
মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রোকছানা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ছোট ব্যবসায়ী। কোনো মতে সংসার চালায়। রান্নার জন্য জ্বালানি কিনতে গেলে আর্থিক সমস্যা হয়। তাই সমিতি থেকে ঋন নিয়ে একটি গাভী কিনি। একটি বাছুর দিয়েছে। প্রতিদিন সকালে গোয়ালঘর থেকে গরুর গোবর তুলে কাঠিতে পেচিয়ে রোদে শুকাতে দেই। আবহাওয়া ভালো থাকলে ৩ থেকে ৪ দিনে শুকিয়ে যায়। তা দিয়ে রান্নার কাজ করি। পাশাপাশি বাড়ির পাশে থেকে গাছের পাতা কুড়িয়ে রান্না-বান্নার কাজ সারতে হয়।
আলীহাট ইউনিয়নের সাধুরিয়া গ্রামের তহমিনা আক্তার বলেন, আমরা গ্রামের মানুষ, বিদ্যুৎ আছে কিন্তু গ্যাস নেই। স্বামী গৃহস্থ। সামান্য জমি আছে। নিজেই চাষ করে। আর বাড়িতে ৪টি গরু আছে। জমিতে গোবর প্রয়োগের পর অবশিষ্ট গোবর মাঠে শুকিয়ে জ্বালানি বানাই। শুকনা মৌসুমে ডাল-পাতা কুড়িয়ে রান্নার কাজ সারি। আর গোবর থেকে তৈরি এসব জ্বালানি বর্ষার জন্য মজুদ রাখি। তখন রান্নার কাজে ব্যবহার করি।
হাকিমপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাকিমপুর উপজেলায় ছোট বড় মিলে ৬০ হাজার গরু আছে। এরমধ্যে অর্ধশত খামার আছে। বাকিগুলো গৃহপালিত গরু।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলাতানা ঢাকা বিজনেসকে বলেন, হাকিমপুর উপজেলার গরু থেকে সংগৃহীত ৯০ ভাগ গোবর কৃষি কাছে ব্যবহার করা হয়। আর ১০ ভাগ ব্যবহার করা হয় জ্বালানি হিসেবে।
ঢাকা বিজনেস/এইচ
