২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার



আর কত ঊর্ধ্বমুখী থাকবে নিত্যপণ্যের দাম

হাকিম মাহি || ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৬:৩৯ এএম
আর কত ঊর্ধ্বমুখী থাকবে নিত্যপণ্যের দাম


পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ সব নিত্যপণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, দুই সপ্তাহ ধরে মাছ, মাংস, ডিম, সবজির দাম কমছেই না। বরং কোনো কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। ক্রেতার বলছেন, কাঁচামরিচের দাম খুচরা বাজারে ১৬০ টাকা। বড় ইলিশ মাছের দামও নতুন করে বাড়তি। বড় ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ১ হাজার ৬০০ টাকা। তারা বলছেন, আর কতকাল এভাবে ঊর্ধ্বমুখী থাকবে নিত্যপণ্যের দাম?  শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজার, কৃষি মার্কেট ও আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজার ঘুরে এই তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২৪০ টাকা থেকে ভালো মানের আদার দাম ২৬০ টাকা হয়েছে। ৯০ টাকা পেঁয়াজের দাম। নতুন করে গরম আলুর বাজার। ৫০ টাকার নিচে আলু বিক্রি হচ্ছে না।  ভারতীয় রসুনের দাম ২৬০ টাকা, দেশি রসুন ভালো মানের ২৪০ টাকা। 

বাজারে একটু ভালো মানের মধ্যে কম দামি চাল পাইজাম। প্রতিকেজি ৫৫ টাকা। ২৮ চাল ৬০ টাকা, মিনিকেটের দাম শুরু হয়েছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। মশুর ডাল মোটাটা ১০০ এবং চিকনটার দাম ১৩০ টাকা। 

কাঁচাবাজারে সবচেয়ে কমদামি সবজি হচ্ছে পেঁপে। কেজিপ্রতি দাম ৪০ টাকা। আর ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। পটল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, শসা ৬০, কচুমুখী ৭০, উচ্ছে ৮০, লাউ ৫০, জালি কুমড়া ৫০, পাকা টমেটো ১২০ টাকা। শুকনা মরিচ ৪২০ টাকা। বেগুনের দামও ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৭০ টাকা। 

সবচেয়ে কম দাম লেবুর। হালি ২০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা। শাকের মধ্যে পুইশাক আঁটি ৩০, লাল শাক ২০ এবং মুলাশাক ১৫ টাকা।  

মাছের বাজার রীতিমতো অস্থির। তবে, ইলিশের দাম কিছুটা বেড়েছে। গরিবের  ইলিশখ্যাত পাঙ্গাস ২০০, ছোট ইলিশ ৬০০, মাঝারি সাইজেরটা ১২০০ এবং বড়টা ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাগদা চিংড়ি ৭০০, গলদা চিংড়ি ৯০০, শিং ৪৫০, মাগুর ৪৫০, পাবদা ৪৫০, রুই ৪০০ এবং কৈ মাছ সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা। টেংরা ছোটটার দাম ৬০০ এবং বড়টা ১০০০ টাকা। ছোট বেলে ৮০০, কাতল ৪০০। 

মাংসের বাজারও নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। গরুর মাংস ৭৫০, খাসির মাংসের দাম ১০০০ টাকা। লেয়ার মুরগি ৩৪০, পাকিস্তানি ৩২০, ব্রয়লার ১৮০ টাকা। ডিমের বাজার স্থির। হাসের ডিমের হালি ৭৫ এবং মুরগির ডিমের হালি ৫০ টাকা। 

জিরা ১১০০, ধনে ২২০, এলাচি, ১৯৫০ থেকে ২৫০০, কিসমিস ৪২০, দারুচিনি ৪৩০, লবঙ্গ ১৫২০, চিনি ১৪০, কালোজিরা ২৮০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন ১৬৪, সয়াবিন (খোলা) ১৪০-১৫৪ টাকা। খোলা মুড়ি ৮০, চিড়া ৭০ থেকে ৮০ খোলা। আখের গুড় ১৪০ টাকা। লাল চিড়া ৮০ টাকা।


বিএনপি বাজারের আশেপাশের বাসিন্দা তাসলিমা। তিনি ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে সবজির দাম কমছে না। কম টাকা বেতন দিয়ে চাল, ডাল, সবজি একসঙ্গে কেন সম্ভব নয়। প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়তি। শুনেছি কাওরানবাজারে ঢেঁড়সের দাম ৪০ টাকা কেজি। কিন্তু আমাদের বাজারে আজ ৬০-৭০ টাকা। দিনে দিনে নিত্যপণ্যের দাম আমাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ভাই বলেন তো, আর কত এভাবে ঊর্ধ্বমুখী থাকবে নিত্যপণ্যের দাম?’

কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা মিরাজ বলেন, ‘পাইকারি বাড়তি দামে কিনে কম দামে বেচবো কেমনে? কাঁচাসবজির দাম স্থির থাকে না। একই দাম দিয়ে সবসময় কিনতে পারি না।’

আড়তদার সোহেল বলেন, ‘কম দামে কোনো কিছু আমদানি করতে পারছি না। ডলারের সংকটে এলসি খুলতে পারছি না। ভারত থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ, রসুন, আদা কিনতে হচ্ছে। আড়তে রসুনের দাম কিছুটা কমের দিকে। ১৭০ টাকায়ও রসুন বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম বেশি। খুচরা বাড়ারে মনে হয় ৫০ টাকা।’ 

সবজির পাইকারি বিক্রেতা লিটন বলেন, ‘এখন থেকে সবজির দাম কিছুটা কমবে। মৌসুম সামনে। এখন সবজি আসা শুরু হয়েছে।’  

আবারও ইলিশের দাম কিছুটা বেড়েছে জানিয়ে মাছ ব্যবসায়ী আশ্রাফ বলেন, ‌‌‘ছোট ইলিশ এখন ৫৫০ টাকা। বড়টা কেজিতে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। গত সপ্তাহে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সামনে কমতে পারে।’   

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন