কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘আগামী তিন বছরের মধ্যে চাহিদার ৪০ থেকে ৫০ ভাগ ভোজ্যতেল দেশেই উৎপাদন হবে। এ বছর আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তা ও টেকনিশিয়ানরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।’
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে গাজীপুরের জয়দেবপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ব্রির বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব বলেন তিনি।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাংলাদেশে ৩০-৪০ বছর আগে সবাই মূলত সরিষার তেল খেত। তখন সরিষার ভালো জাত ছিল না, উৎপাদন ছিলো না। এরপর বিদেশ থেকে সয়াবিন ও পামওয়েল সস্তায় আমদানি করে তেলের চাহিদা মেটানো হতো। কিন্তু এখন এমন অবস্থা হয়েছে আমরা পুরোপুরি তেল আমদানি নির্ভর হয়ে গেছি।’
তিনি বলেন, আশার কথা হচ্ছে, এ সমস্যা সমাধানে দুটি সফলতা এসেছে। স্থানীয়ভাবে ভোজ্যতেল উৎপাদন হবে। বারি ও বিনার বিজ্ঞানীরা অনেক ভালো সরিষার জাত উদ্ভাবন করেছেন। আগে বিঘায় দেড় থেকে দুই মণ সরিষা হতো এখন সেটা ৬ থেকে ৭ মণ হচ্ছে। আগে সরিষা ছিল ছোট ছোট কিন্তু এখন আকারেও বড় হয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমনের পরই সরিষা লাগানো হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত আমন ধান হয় ১৪০ বা ১৬০ দিনে। একারণে সময় বেশি লাগায় কৃষকেরা পরে আর সরিষা লাগাতে চান না। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা এমন জাত আবিষ্কার করেছেন যার কারণে ধার ১১০ বা ১১৫ দিনেই হয়। কাজেই আমন এবং বোরো ধানের মধ্যে যে সময়টা সেই সময়ের মধ্যে সরিষা আবাদ করা সম্ভব। ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে সরিষা এসে যায়। এতে সরিষা তুলে বোরো আবাদ করতে পারেন কৃষকরা। অতিরিক্ত এই সরিষা থেকে ৩০ বা ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন কৃষকরা।’
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজির আলম। এ ছাড়া ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত জুনে ঢাকায় এক সভায় কৃষিমন্ত্রী জানান, দেশে বছরে প্রায় ২৪ লাখ টন পরিশোধিত ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয় ৩ লাখ টন। এ হিসেবে প্রায় ২১ লাখ টন আমদানি করতে হয়।
ঢাকা বিজনেস/এম