২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



পশুর হাটে দালালের দৌরাত্ম্য, ফুঁসছেন ক্রেতা-বিক্রেতা

তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা || ২৩ জুন, ২০২৩, ০৭:৩৬ এএম
পশুর হাটে দালালের দৌরাত্ম্য, ফুঁসছেন ক্রেতা-বিক্রেতা


ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গাইবান্ধার বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। প্রতিটি হাটে  প্রচুর  গরু-ছাগল উঠেছে।  তবে এসব হাটে বেড়েছে দালালের দৌরাত্ম্য।  দালালদের দৌরাত্ম্যে ফুঁসছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তারা বলছেন, দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রায়ই ঠকতে হচ্ছে। 

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ-সূত্রে জানা গেছে, কোরবানি উপলক্ষে জেলায় ২৫টি স্থায়ী ও ১৬টি অস্থায়ী হাটে পশু কেনাবেচা হচ্ছে। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুর, দাড়িয়াপুর, ভরতখালি সাদুল্লাপুর, ধাপেরহাট ও মাঠেরহাটসহ আরও বিভিন্ন হাটে বসানো হয়েছে বিশাল পশুর হাট। এসব হাটে কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ষাঁড়, মহিষ, গাভী, ছাগল ও ভেড়া কেনা-বেচা শুরু হয়েছে।    

এছাড়া সাঘাটা উপজেলায় নিয়মিত এবং মৌসুমীসহ প্রায় ৬টি হাটে প্রচুর পরিমাণে দেশি-বিদেশি, ছোট-বড় গরু-ছাগল বেচা-কেনা হচ্ছে। বছরব্যাপী গরু পালনকারী খামারিরা এসব হাটে প্রচুর পরিমাণে কোরবানির পশু বিক্রি করছে। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা কোরবানির জন্য শেষ মুহূর্তে পচ্ছন্দের গরু-ছাগল ক্রয় করতে হাট-বাজারগুলোতে ভিড় করছেন। ঈদের কয়েকদিন বাকি থাকায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা হতে পাইকারেরা হাটে ভিড় করলেও গো-খাদ্যের দাম ও গাড়িভাড়া কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী গরুর দাম বেশি পড়ায় লোকসানের আশঙ্কায় পাইকারদের।

এদিকে, প্রতিহাটে দালাল ও ফড়িয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে ঠকছেন। এইসব দালালের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন তারা। হাটে আসা দালালরা মালিকদের সঙ্গে রফাদফা করে পশু হাতে নেন। ওই দামের চেয়ে বেশি বিক্রিত টাকা ঢুকছে দালালদের পকেটে। 

দাড়িয়াপুর হাটে আসা খাদেমুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘দালাল ছাড়া হাটে পশু কেনা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাদের সঙ্গে চুক্তি করে পশু কিনতে হয়।’

ভরতখালি হাটের বিক্রেতার খাজানুর রহমান বলেন, ‘হাটে আসার সঙ্গেই দালালদের সঙ্গে রফাদফা ছাড়া পশু বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই তাদের কমিশন দিয়েই গরু বিক্রি করতে হয়। এতে করে আমার ক্ষতি হয়েছে।’

খামারি আনছার আলী বলেন, ‘গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে বেড়ে গেছে। এ কারণে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পারলে এবার খামারিদের লোকসান গুনতে হবে।’

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ‘জেলায় ১৫ হাজার ৮২১টি খামারসহ ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৭৭টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। আর কোরবানির চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৭০টি পশুর।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে কোরবানি পশুর হাট জমে উঠেছে।  বিক্রয়যোগ্য হাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল টিমরয়েছে।  আশা করছি, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন জায়গা কোরবানি পশুর চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিক রাখবে।’

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা জাল টাকা ছড়িয়ে দিয়ে যেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে না পারে, সেজন্য হাট কমিটির লোকজন ও পুলিশ তৎপর রয়েছে।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন