২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



শুধু অনিয়মের কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারবে ইসি

স্টাফ রিপোর্টার || ১৮ মে, ২০২৩, ০৫:৩৫ পিএম
শুধু অনিয়মের কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারবে ইসি


নির্বাচন চলাকালে অনিয়ম হলে যেকোনো মুহূর্তে এক বা একাধিক কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনের খসড়ায় এই বিধান রাখা হয়েছে। তাতে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল বা স্থগিতের বিষয়টি নেই। 

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরপিও সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর আগে গত ২৮ মার্চ মন্ত্রিসভার বৈঠকে আরপিও সংশোধনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল খসড়ায় আরও কিছু সংশোধন, মতামতসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবারও মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। 

এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে। তার আগেই আরপিও সংশোধন করা হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। 

মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনের খসড়ার বিষয়ে জানাতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‌‘পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধ করার জন্য বা যেকোনো কারণে নির্বাচন চলাকালে যেকোনো মুহূর্তে এক বা একাধিক কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করা যাবে।’

এসময় সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন এর আগে গাইবান্ধায় একটি আসনের উপনির্বাচনে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করেছিল ইসি। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব। 

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবগুলোই পর্যালোচনা করে মন্ত্রিসভা যে বিষয়গুলো যৌক্তিক বলে মনে করেছে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়ক হবে বলে মনে করেছে সেগুলোই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’ 

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচন চলাকালে বা তাদের যদি মনে হয় কোনো কেন্দ্রের নির্বাচনে সমস্যা হচ্ছে, তখন তারা ওই কেন্দ্রের, সেটি এক বা একাধিক হলে তা বাতিল বা স্থগিত করতে পারবে। কেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে এক বা একাধিক। এখানে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।’

এক বা একাধিক কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত বা বাতিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোট চলাকালে বা ভোট গণনার সময় দ্রুত তদন্ত করে হতে পারে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। 

মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে শুধু রিটার্নিং কর্মকর্তা কারও মনোনয়নপত্র বাতিল করলে তার বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের যে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে,তাতে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হলেও সে বিষয়ে আপিল করার সুযোগ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হলো, কিন্তু কেউ মনে করলেন সেটি সঠিক হয়নি, তখন চাইলে সে বিষয়ে আপিল করা যাবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এত দিন প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাত দিন আগে বিল জমা দিতে হতো। না হলে মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হতো। আরপিও'র প্রস্তাবিত সংশোধনীতে  মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত বিলের কপি জমা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সঙ্গে টিআইএন সনদ এবং কত টাকা আয়কর জমা দেওয়া হয়েছে, তার রসিদ জমা দিতে হবে। আগে এগুলো ছিল না।’

প্রস্তাবিত আরপিও সংশোধনীতে গণমাধ্যমকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের কাজে কেউ বাধা দিলে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদন্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র বিষয়গুলো (নারী নেতৃত্বসহ) পূরণের সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। 

প্রস্তাবিত সংশোধনীতে জাতীয় নির্বাচনে সংসদীয় আসন ভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে একই ব্যক্তি একাধিক আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হতে পারবেন বলে জানান তিনি।

তবে সাধারণত জাতীয় নির্বাচনগুলোতে প্রতি জেলার সবকটি নির্বাচনী আসনের জন্য একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা হন। জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) তাঁর জেলার নির্বাচনী আসনগুলোর জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা হন।

তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভার বৈঠকে 'সুরক্ষিত লেনদেন (অস্থাবর সম্পত্তি) আইন, ২০২৩ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই আইন পাস হলে অস্থাবর সম্পত্তির ভিত্তিতেও ঋণ নেওয়া যাবে। মোট ১৬ ধরনের বিষয় উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। এসব অস্থাবর সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন থাকবে। মেধাসত্ত্বও এই অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে।’ 

ঢাকা বিজনেস/এইচ




আরো পড়ুন