আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংকঋণের নিয়ন্ত্রণমূলক সুদ হার তুলে দিচ্ছে সরকার। জুলাই থেকে চালু হবে বাজারভিত্তিক সুদ হার। যা নির্ভর করবে ট্রেজারি বিলের গড় সুদ হার ও ব্যাংকের কমিশনের ওপর। রবিবার (২ এপ্রিল) ব্যাংক নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক এই তথ্য জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘অর্থপাচার ঠেকাতে রপ্তানির পণ্যমূল্যের হিসাবেও নজরদারি বাড়ছে। ক্রেডিট কার্ড, গাড়ি কেনা বা বিয়ের মতো ব্যক্তিগত কাজ বাদে বাকি সব ঋণের জন্য সর্বোচ্চ নয় শতাংশ সুদ দেন গ্রাহকরা। ২০২০ সালের এপ্রিলে এই সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। অবশ্য সুদ হার নিয়ন্ত্রণ না করে, সেটিকে বাজারের চাহিদা ও জোগানের ওপর ছাড়ার পরামর্শ দিচ্ছিলেন বিশ্লেষকরা। সবশেষ আইএমএফ-ও এ ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দেয়। এবার, নীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।’
মেজবাউল হক বলেন, ‘নতুন নীতি অনুযায়ী, বর্তমানে স্বল্প মেয়াদি গড় হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ বেশি সুদ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। তবে এই সীমাও নিয়মিত বিরতিতে পরিবর্তন করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংকারদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর, আমদানি ও বৈদেশিক মুদ্রার বাজার পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছেন। বৈঠকে জানানো হয়, আমদানি মূল্যে নজরদারি বাড়ায়, প্রতিমাসে অন্তত তিন শ কোটি ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।’
সভায় আগামী মুদ্রানীতি, সুদহার, আমদানি-রপ্তানিতে ডলারের মূল্যহার, ডলারের বিনিময় হার, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা এবং লেনদেন প্রক্রিয়া নগদের বদলে (ক্যাশলেস) ডিজিটাল করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
মেজবাউল হক আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার নির্ধারণের এ করিডোর পদ্ধতিকে ‘স্মার্ট’ (শর্ট টার্ম মুভিং এভারেজ) নামে নামকরণ করছে। আগামী মুদ্রানীতিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে। আশা করছি, আগামী ১ জুলাই থেকে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশিতে ডলার কেনাবেচা করলে ব্যাংকগুলোকে শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বৈঠকে। এরই মধ্যে অনিয়মে জড়িত ১২টি ব্যাংককে তলবও করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
ঢাকা বিজনেস/তারেক/এনই/