আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এই দিন উপলক্ষে সারা দেশে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারিভাবে এবং দলীয় ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি রেখেছে। যথাযোগ্য মর্যাদা ও স্মরণে দিনটি পালিত হবে।
১৯৭১ সালের এই দিনে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মাতৃভূমিকে মুক্ত করার ডাক দিয়েছিলেন। তিনি শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ইহাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন।’ এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্বিচার হত্যা, ধ্বংস ও পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে ৯ মাসের মরণপণ লড়াইয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদানের বিনিময়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের। গোটা জাতি আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের। শ্রদ্ধা জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বাংলার অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
অত্যাচার-নিপীড়নে জর্জরিত বাঙালি জাতির সামনে আলোকময় ভবিষ্যতের দুয়ার খুলে দেওয়ার দিন ২৬ মার্চ। গৌরব ও স্বজন হারানোর বেদনার এই দিনে বীর বাঙালি সশস্ত্র স্বাধীনতাযুদ্ধের সূচনা করেছিল। মাতৃভূমিকে হিংস্র মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রগতি, কল্যাণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে অর্জন করা হয় স্বাধীনতা। দেশের সার্বভৌমত্ব সংহত করার নতুন শপথে বলিয়ান হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার করে বীর বাঙালি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরুর পর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করতে দেশবাসীকে নির্দেশ দেন। তৎকালীন ইপিআরের ওয়্যারলেস থেকে বঙ্গবন্ধুর সেই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় দেশের সর্বত্র। বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণায় সেদিনই ঐক্যবদ্ধ সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে গোটা জাতি। চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের জনগণকে।
সারা দেশের স্মৃতিসৌধগুলোতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কুচকাওয়াজ, মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দল ও সংগঠন এসব কর্মসূচি পালন করছে।
ঢাকা বিজনেস/এম