ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরিসহ বিভিন্ন অপরাধে ২০ হাজার টাকা জরিমানা থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজার বিধান রেখে ওষুধ ও কসমেটিক আইন-২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ওষুধ ও কসমেটিক আইন-২০২৩ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত এই আইন অনুযায়ী অসৎ উদ্দেশ্যে ওষুধের কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে, কোনো নকল ওষুধ উৎপাদন ও জ্ঞাতসারে বিক্রি, মজুত, বিতরণ বা বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রদর্শন, ভেজাল ওষুধ উৎপাদন, বিক্রি ও মজুতের মতো অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজা পেতে হবে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনটি প্রথমে শুধু ওষুধ আইন থাকলেও শেষে তাতে কসমেটিকের বিষয়টিও যুক্ত করে ওষুধ ও কসমেটিক আইন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর ফলে এখন কসমেটিক উৎপাদনের জন্যও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হবে।’
প্রস্তাবিত আইনে অন্যান্য সাজার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া বা লাইসেন্সের শর্তের বাইরে গিয়ে ওষুধ উৎপাদন, নিবন্ধন ছাড়া ওষধু উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, মজুত বা প্রদর্শন এবং সরকারি ওষুধ বিক্রি বা মজুত বা প্রদর্শন করলে ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।’
রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধেরও বিধান রয়েছে প্রস্তাবিত এই আইনে। এই বিধান লঙ্ঘন করলে সেটি অপরাধ হবে এবং সেজন্য শাস্তি পেতে হবে। এ রকমভাবে প্রস্তাবিত এই আইনে মোট ৩০টি অপরাধের জন্য বিভিন্ন ধরনের শাস্তির বিধান রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এদিকে, দেশের তিন ফসলী জমিতে কোনো ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কাছ থেকে তিন ফসলি জমিতে উন্নয়ন ও স্থাপনা তৈরির কাজের জন্য আবেদন পাওয়া যাচ্ছে। সোলার প্যানেল থেকে শুরু করে ভবন তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেনে যে, কোনো তিন ফসলী জমি নষ্ট করা যাবে না এবং প্রকল্প নেওয়া যাবে না। এগুলো সংরক্ষণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার কথা এখন মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত হিসেবে চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
এ ছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে কপিরাইট আইনের খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এতে সংজ্ঞায় কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। আর পাইরেসি প্রতিরোধের জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। ডিজিটাল বা কম্পিউটার ভিত্তিক কর্মকাণ্ডকে প্রস্তাবিত আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
এ ছাড়া অপরাধের ধরন অনুযায়ী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
ঢাকা বিজনেস/এইচ