১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবার



টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

ঢাকা বিজনেস স্পোর্টস ডেস্ক || ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:১২ এএম
টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ


তাসকিনের শর্ট বল। আকিল হোসেন ব্যাট চালালেন। সহজ ক্যাচ গেলো মেহেদী মিরাজের হাতে। তাতেই উল্লাসে মেতে উঠলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা। অল আউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৭ রানে জিতলো বাংলাদেশ। জিতলো টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তিন ম্যাচের সিরিজে পর পর দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের গৌরব দেখলো টিম টাইগার। 

কিংস্টনে দ্বিতীয় টি টোয়েন্টিতে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ অল আউট হয়ে যায় ১০২ রানে। ১২৯ রান করেও ২৭ রানের জয়, যা ভাবাও যায় না। লো স্কোরিং ম্যাচেও হাল না ছেড়ে লড়াই করে জেতাই প্রমাণ করে- বাংলাদেশ পরিণত হচ্ছে। 

১৭ বলে অপরাজিত ৩৫ রান নিয়ে ম্যান অব দি ম্যাচ হয়েছেন টাইগার ব্যাটার শামীম হোসেন। 

তবে ম্যাচ জিতলেও বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেলো। ব্যাটিং পর্বটা মোটেও সুখকর ছিলো না টাইগারদের। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ থেমে যায় ১২৯ রানে। হারাতে হয় ৭ উইকেট। 

১৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১০২ রানে আটকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো করলেও ওয়েষ্ট ইন্ডিজ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন। তৃতীয় ওভারে ৪ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন তিনি। ব্র্যান্ডন কিং করেন ৮ রান। ৪ বলে কোনো রান না করেই ফিরে যান ফ্লেচার। এরপর চার্লস ১২ বলে নেন ১৪ রান। নিকোলাস পুরান ৮ বলে নিতে পারেন মাত্র ৫ রান। ওদিকে রোমারিও শেফার্ড ৫ বলে কোনো রান না করেই ফিরে যান। ১০ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৪। বাংলাদেশ ছিল ৪৫/৪। রোস্টন চেজ করেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ (৩৪)। সমান সংখ্যক বলে আকিল হোসেন নেন ৩১। এছাড়া গুদাকেশ মতি এবং আলজেরি জোসেফ ফিরেন কোনো রান না করেই। ওবেদ ম্যাকয় ১ রানে অপরাজিত ছিলেন। 

বাংলাদেশের পক্ষে দুটি ঘটনা ছিল খেলার মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। তৃতীয় ওভারে দুই উইকেট নেন তাসকিন। অন্যদিকে ১৭তম ওভারে পর পর দুই বলে ২ উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। ম্যাচ শেষে তাসকিন পান তিন উইকেট। ৩.৩ ওভারে তিনি খরচ করেন ১৬ রান। মেহেদী হাসান, তানজিম সাকিব এবং রিশাদ দুই উইকেট করে নেন। হাসান মাহমুদ পান ১ উইকেট। মিরাজ ১ ওভারে ৮  রান দিলেও কোনো উইকেট পাননি। 

অবশ্য আগে ব্যাট করতে নেমে মোটেও সুবিধে করতে পারেনি টাইগার ব্যাটাররা। ২.৩ ওভারে দলের রান যখন ৮, তখন স্পিন বলে ডাউন দি উইকেট খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হয়ে যান অধিনায়ক লিটন। ১০ বলে করেন ৩ রান। পুরো ওয়েষ্ট ইন্ডিজ সিরিজটাই তার জন্য ছিল কুফা। টেস্ট, ওয়ানডে, টি টোয়েন্টি সব জায়গায় ব্যর্থ। 

১১ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। তানজিদ আউট হন ২ রান করে। এরপর সৌম্য আউট হয়ে যান দলীয় ৩৯ রানে। ১৮ বলে ১১ রান করেন তিনি। টাইগার ব্যাটাররা যখন রান নিতে গিয়ে খাবি খাচ্ছিলেন, মিরাজ তখন নির্ভয়ে ব্যাট চালিয়ে যান। দুইবার জীবন পাওয়া মিরাজও ফিরে যান দলীয় ৪৫ রানে। ২৫ বলে করেন ২৬ রান তিনি। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪৫। যা টি টোয়েন্টির জন্য মোটেও মানানসই নয়। ১০.৩ ওভারে ওঠে ৫০ রান। ১১তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে যান রিশাদ। ৪ বলে করেন ৫ রান। ৭২ রানে পড়ে ৬ষ্ঠ উইকেট। ১১ বলে ১১ রান করে মেহেদী হাসান। ৯৭ রানে পড়ে সপ্তম ইউকেট। জাকের আলী ২০ বলে করেন ২১ রান। ১২৯ রানে থামে বাংলাদেশ। অপরাজিত দুই ব্যাটার শামীম করেন ১৭ বলে করেন ৩৫ রান। তানজিম করেন ১১ বলে ৯ রান। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে স্পিনার গুদাকেশ মতি নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নেন আকিল হোসেন, রোস্টন চেজ, আলজেরি জোসেফ এবং ওবেদ ম্যাকয়।  

সেন্ট ভিনসেন্ট এর রাজধানী কিংষ্টনে আর্নস ভেল স্টেডিয়ামে টসে জিতে বোলিং নিয়েছিল স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লক্ষ্য পরিষ্কার- অল্প রানে বেঁধে ফেলা সফরকারীদের। উইকেট ছিল রীতিমতো স্পিনিং ফাঁদ। যা বাংলাদেশ একসময় পছন্দ করতো; এখন সেটাই মোকাবেলা করতে হচ্ছে বিদেশের মাঠে। তাতে বিষে নীল একসময়ের স্পিনিং নির্ভর বাংলাদেশ। যদিও বাংলাদেশ জিতেছে পেটস ও স্পিনের  যৌথ অবদানে। 

বাংলাদেশ একাদশে ছিলেন লিটন, সৌম্য, তানজিদ, মিরাজ, জাকের, মেহেদী, শামীম, রিশাদ, তানজিম, তাসকিন, হাসান। আফিফের জায়গায় দ্বিতীয় টি টোয়েন্টিতে দলে ঢুকেন মিরাজ। 



আরো পড়ুন