‘অ রুদ্ধ’র সম্মাননা পেলেন কবি ও কথাসাহিত্যিক নাহিদা আশরাফী। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর.সি. মজুমদার মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক। প্রধান অতিথি ও প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাশিল্পী সেলিম মোরশেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাশিল্পী নাসরীন জাহান, কথাশিল্পী পারভেজ হোসেন, কবি ও ‘লোক’ সম্পাদক অনিকেত শামীম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নকিব মো. নসরুল্লাহ।
নাহিদা আশরাফীর গল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন কবি ও প্রাবন্ধিক শেখ ফিরোজ আহমেদ বাবু ও গল্পলেখক প্রমিথ রায়হান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ রুদ্ধ’র আহ্বায়ক কথাসাহিত্যিক ইশরাত তানিয়া। তিনি ‘অ রুদ্ধ’কে একটা পাটাতন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়ে ‘অ রুদ্ধ’র রুদ্ধদ্বার ভাঙবে ও সৃষ্টিশীল মানুষের আড়াল-চাপা শিল্পীসত্তাকে অন্বেষণ করবে।
কবি ও কথাসিহ্যিক নাহিদা আশরাফীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রেস্ট, সম্মাননাপত্র, চাদর ও ফুলের স্তবক তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা। সম্মাননা গ্রহণ করার পর নাহিদা আশরাফী তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আজকে আমার কোনো ভাষা নেই, শুধু কৃতজ্ঞতাটুকু প্রকাশ করা ছাড়া।
আলোচনাপর্ব শুরু করেন অ রুদ্ধ’র সদস্য সচিব, কবি ও গল্পকার আব্দুল আজিজ। এরপর নাহিদা আশরাফীর গল্প নিয়ে আলোচনা করেন অরুদ্ধ’র সদস্য ও লেখক লাবণী মণ্ডল।
আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে নাসরীন জাহান বলেন, মৌলিক সাহিত্য গোলাপ ফোটানোর মতোই কঠিন কাজ। যা সময় দাবি করে। নাহিদা আশরাফী সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি তার সৃজনশীল সত্তাটির প্রতি যেন যত্নশীল হন।
নাহিদা আশরাফীর বহুমুখী কাজ নিয়ে অভিমত প্রকাশ করেন কথাশিল্পী পারভেজ হোসেন। কবি ও প্রাবন্ধিক শেখ ফিরোজ আহমদ বাবু বিশ্ব সাহিত্যের ছোটগল্পের ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরে নাহিদা আশরাফীর কয়েকটি গল্প নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন।
তরুণ লেখক প্রমিথ রায়হান নাহিদা আশরাফীর গল্পে রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা চিহ্নিত করেন। এই ধারায় লেখার জন্য লেখককে আহ্বান জানান। নাহিদা আশরাফীর কয়েকটি গল্প নিয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক ড. নকীব মো. নসরুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের শেষদিকে প্রধান অতিথি ও প্রধান আলোচক সেলিম মোরশেদ বক্তব্য রাখেন। নাহিদা আশরাফীর গল্প নিয়ে তার আলোচনা ছিল জ্ঞানগর্ভ, তীব্র ও বস্তুনিষ্ঠ। তিনি বলেন নাহিদা আশরাফী ঢাকার লেখক নন, বাংলাদেশের লেখক। মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথি ও সভাপতি তার এই মূল্যায়নধর্মী আলোচনা হাতে সময় নিয়ে আরও বিস্তৃতভাবে করা হলে ভালো হতো।
সভাপতির বক্তব্যে কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, চার ঘণ্টা ধরে এই অনুষ্ঠানে গুণী বক্তাদের আলোচনা শুনেছি। নাহিদা আশরাফীকে শক্তিমান লেখক। তার সৃষ্টিশীলতা অব্যাহত থাকুক।
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে নাহিদা আশরাফীর ভক্ত পাঠককূল অনুষ্ঠানে আসেন। তার গল্প নিয়ে আলোচনা করেন। পাঠকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন আলমগীর কবীর ও তুলি রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী স্মৃতিকণা পাল। নাহিদা আশরাফীর গল্প থেকে পাঠ করেন বাচিকশিল্পী উৎপলা ভট্টাচার্য, পলি পারভীন ও মাসুম আজিজুল বাশার।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন রশিদ কামাল।