২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার



রঙিন ফুলকপি চাষে সাড়া ফেলেছেন আরশেদ

আব্দুল্লাহ আল নোমান, টাঙ্গাইল || ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৯:০১ এএম
রঙিন ফুলকপি চাষে সাড়া ফেলেছেন আরশেদ


টাঙ্গাইলে প্রথমবারের মতো শীতকালীন সবজি রঙিন ফুলকপি চাষ হচ্ছে। জেলার ভূঞাপুরে এই সবজির সফলতা পাওয়া গেছে। ভূঞাপুর পৌর এলাকার ছাব্বিশা গ্রামের আরশেদ আলী বাড়ির আঙিনায় পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপি চাষ করে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। শুধু জৈব সার প্রয়োগ করে ৪ রঙের ফুলকপি চাষ করে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন।

উপজেলায় এবারই প্রথম পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন কৃষক আরশেদ আলী। তার এমন সফলতা দেখে আগ্রহ প্রকাশ করছেন স্থানীয় তরুণ ও যুবকসহ অনেক সবজি চাষি। এ ছাড়া তার এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক জনতা। দেখতে এসে কেউ কেউ ফুলকপি কিনছেন, কেউ পরামর্শ নিচ্ছেন, আবার কেউ ছবি তুলছেন এবং ভিডিও ধারণ করছেন। 

চাষি আরশেদ বলেন, ‌‘কৃষি অফিস থেকে নতুন জাতের রঙিন ফুলকপির ৪০০ চারা, জৈব সার, পোকাদমন কীটনাশকসহ সব ধরনের সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পাশে মাত্র ১৫ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি। এতে ৪ রঙের ফুলকপি রয়েছে। ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক-সার ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘জমিতে চারা রোপণের ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে জমিতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফসল পেয়েছি। বাজারে নেওয়ামাত্রই বিক্রি হয়ে যায় এসব রঙিন কপি। দামও ভালো পাচ্ছি।’

পৌর এলাকার কুতুবপুরের মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘রঙিন ফুলকপির নাম অনেক শুনেছি। কিন্তু চোখে দেখতে পারিনি। যখনই জানতে পারলাম পাশের গ্রামে আরশেদ আলী নামে একজন কৃষক রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন, তখনই দেখতে আসছি। চাষি আরশেদ থেকে রঙিন ফুলকপি চাষ সম্পর্কে জানলাম। আগামীতে আমিও এই ফুলকপি চাষ করবো আশা করছি।’

রঙিন ফুলকপি ক্রেতা রফিকুল ও রহিম মিঞা বলেন, ‘এ ধরনের রঙিন ফুলকপি এর আগে কখনো দেখিনি। উপজেলা কৃষি অফিসার ড. হুমায়ূন কবীরের ফেসবুক পোস্টে রঙিন ফুলকপির ছবি দেখে ক্ষেতে গিয়ে ৫০ টাকা দরে একটি করে ফুলকপি কিনেছি।’

জানা যায়, চীনে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও খুব সুন্দর। আমাদের দেশে অর্ধ সিদ্ধ করে খাওয়া খুবই উপযোগী। অন্যান্য ফুলকপি চাষের যে পদ্ধতি ওই একই পদ্ধতিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করা হয়। খরচ ও পরিশ্রম একই। পাশাপাশি শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়। স্থানীয় হাটবাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’


এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘উপজেলায় এই প্রথম রঙিন ফুলকপি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম কেউ আগ্রহী ছিল না। পরে আরশেদ আলী নামে এক কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করলে তাকে কৃষি অফিস থেকে ৪০০ ফুলকপির চারা, জৈব সার, পোকারোধক কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা প্রদান করা হয়। প্রাথমিকভাবে ৪ রঙের ফুলকপি চাষ করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাসার বলেন, ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে জেলার ১২ উপজেলাতে পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারমধ্যে সবার আগে ভূঞাপুর উপজেলায় সফলতা পাওয়া গেছে। এ জাতের ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ বেশি। ক্যান্সাররোধেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে এ ফুলকপি। চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পাওয়ায় অনেক কৃষক আগামী বছরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন