২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার



তিস্তায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি: বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে পানি প্রবাহিত

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ২৬ আগস্ট, ২০২৩, ১১:৩৮ এএম
তিস্তায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি: বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে পানি প্রবাহিত


নীলফামারী জেলায় তিস্তা নদীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার নিচে নামে। পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাই খুলে রাখা হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোড সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে শুক্রবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যরাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হয়। এরপর বেলা ১২টায় বিপদসীমা অতিক্রম করে ৩ সেন্টিমিটার, বিকেল ৩টায় ১১ সেন্টিমিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

শনিবার পানি কমে সকাল ৬টায় ১০ সেন্টিমিটার, সকাল ৭টায় সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার নিচে নামে।

তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি,  খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ১৫টি চর গ্রামের প্রায় ৩ সহস্র্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। 

এদিকে লালমনিরহাট জেলার নদীতীরবর্তী বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি ও সিন্দুর্ণা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের অনেক বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ে। এসময় ডুবে যায় বেশ কয়েকটি রাস্তাঘাট। পানিতে তলিয়ে যায় আমনক্ষেত। শনিবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করলে উন্নতি হতে শুরু করে এসব এলাকার বন্যা পরিস্থিতির।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন,‘গতকাল তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে আমার ইউনিয়নের পূর্বছাতনাই ও ঝাড়সিংহেশ্বর গ্রামের ১ হাজার ৩০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।  শনিবার সকাল থেকে পানি কমায় দুপুর পর্যন্ত ৫০০ পরিবারের বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যায়। পানি কমার গতি অব্যাহত থাকলে রাতের মধ্যে অবশিষ্ট পরিবারের বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যাবে।’

একই উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পানি বৃদ্ধির ফলে আমার ইউনিয়নের ৭ শতাধিক পরিবারের বাড়িতে পানি উঠে। আজ পানি কমায় এসব পরিবারের বাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।’

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলা বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মামুন হোসেন সরকার বলেন, ‘পানি কমায় তিস্তা ব্যারাজের উজানে পাটগ্রাম উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ব্যারাজের ভাটিতে জেলার হাটিবান্ধা, কালিগঞ্জ,আদিমারী ও সদর উপজেলায় তেমন উন্নতি হয়নি।’

তিস্তায় চলতি বর্ষায় প্রথম দফায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে গত ১৯ জুন। সেদিন বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর থেকে পানি বাড়া-কমার মধ্যে থেকে গত ১৫ জুলাই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ১৪ আগস্ট সকালে আবারো পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে সন্ধ্যায় বিপৎসীমার নিচে নামে। 

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, ‘উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আজ শনিবার দুপুর ১২টায় পানি কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে নামে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।’ সূত্র: বাসস

ঢাকা বিজনেস/এনই



আরো পড়ুন