২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার



অর্থনীতি
প্রিন্ট

টার্নওভারে প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগের

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ১১ মে, ২০২৩, ০১:৩৫ পিএম
টার্নওভারে প্রভাব পড়েছে বিদেশি বিনিয়োগের


দেশের বৃহত্তম শেয়ার মার্কেট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও টার্নওভার বেড়েছে বলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে। মূলত বিদেশি বিনিয়োগ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লেনদেনে অংশগ্রহণ বাড়ায় চলতি সপ্তাহে(৭ মে-১১ মে) টার্নওভার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসই-সিএসই সূত্রে জানা গেছে, ডিএসইতে চলতি সপ্তাহে মোট টার্নওভার দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯৫৭ কোটি ৩৫ লাখ ৫৩ হাজার ৫৯১ টাকা। এর আগের সপ্তাহে (৩০ এপ্রিল-৩ মে) টার্নওভার ছিল ২ হাজার ৪০৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে টার্নওভার বেড়েছে ১ হাজার ৫৪৯ কোটি ১৫ হাজার ১০৬ টাকা। অর্থাৎ ৬৪ দশমিক ৩২ শতাংশ টার্নওভার বেড়েছে। এদিকে চলতি সপ্তাহে সিএসইতে টার্নওভার দাঁড়িয়েছে ৭০ কোটি ৩৪ লাখ ২১ হাজার ৮৭৬ টাকা। গত সপ্তাহে যা ছিলো ২৬ কোটি ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ৬১ টাকা। অর্থাৎ ১৬৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ টার্নওভার বেড়েছে। যদিও বৌদ্ধ পূর্ণিমার কারণে গত সপ্তাহে শেয়ারমার্কেট একদিন বন্ধ ছিলো। ফলে চলতি সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে একদিন কম লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই-সূত্রে জানা গেছে, ডিএসইতে চলতি সপ্তাহে ৪০২ টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন করেছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৮টির, কমেছে ৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৬ টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের। ১১ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের কোনো লেনদেন হয়নি। চলতি সপ্তাহে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে সূচকের লেনদেন হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে (১১ মে)  ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৭২ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ২৬৯ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স শরিয়াহ্ সূচক হয়েছে ১ হাজার ৩৭২ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ৫ পয়েন্ট। তবে ডিএসই ৩০ সূচক কমেছে। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসই ৩০ সূচক হয়েছে ২ হাজার ১৯৪ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ২ হাজার ২০৪ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে সূচক কমেছে ১০ পয়েন্ট।

ডিএসই-সূত্রে আরও জানা গেছে, ডিএসইতে বাজার মূলধন কমেছে। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিলো ৭ লাখ ৬৬ হাজার ১০৬ কোটি ৭৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩৭১ টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিলো ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৩১৭ কোটি ৫০ লাখ ৫৬ হাজার ৭৪ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ২১০ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ৭০৩ টাকা।

সিএসই-সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৬৫ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ৫৫টি, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৮ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসই’র প্রধান সূচক সিএসএসপিআই দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৯০ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ১৮ হাজার ৪৮১ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে সূচক বেড়েছে ৯ পয়েন্ট। সিএসই৩০ সূচক গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে কমেছে ১২ পয়েন্ট, সিএসইএসএমইএক্স কমেছে ৪২ পয়েন্ট।

বাংলাদশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল হক ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডসহ বিভিন্ন উৎস থেকে শিগগিরই বিনিয়োগ হওয়ার কথা রয়েছে। যে কারণে বিনিয়োগকারীদের মনে শেয়ারমার্কেট নতুন করে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ারমার্কেটে অংশগ্রহণ বেড়েছে চলতি সপ্তাহে। যার ফলে টার্নওভার বেড়েছে।’

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ(ডিএসই)-এর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘ফরেন ইনভেস্টমেন্ট বেড়েছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও বেড়েছে। যার কারণে চলতি সপ্তাহে শেয়ারমার্কেটে টার্নওভার বেড়েছে।’

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি)-এর নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যাংকগুলো থেকে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শেয়ার মার্কেটে। পাশাপাশি স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড থেকেও বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব কারণে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে শেয়ার মার্কেট নিয়ে। তারা নতুন করে বিনিয়োগে আসছে। তারল্য বাড়ছে বাজারে। ফলে চলতি সপ্তাহে টার্নওভারও বেড়েছে।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন