১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার



৩ বছর পর তোলা হলো সমুদ্রসৈকত থেকে তিমির কঙ্কাল

কক্সবাজার প্রতিনিধি || ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৮:৩১ এএম
৩ বছর পর তোলা হলো সমুদ্রসৈকত থেকে তিমির কঙ্কাল


দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর পর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের হিমছড়ির বালুচরে পুঁতে ফেলা বিশাল আকৃতির একটি তিমির কঙ্কাল তোলা  হয়েছে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে কঙ্কাল সংগ্রহের কাজে নামেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) তিমির কঙ্কাল বালু থেকে তুলে সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহের পর কঙ্কালটি জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শন করা হবে বলে জানা গেছে। 

২০২১ সালের ১০ এপ্রিল মৃত তিমিটি হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে অর্ধগলিত অবস্থায় ভেসে আসে। পরে সৈকতের বালুচরে গর্ত খুঁড়ে তিমিটি পুঁতে ফেলা হয়। তিমিটির ওজন ছিল প্রায় ৯ মেট্রিক টন, দৈর্ঘ্য ৪৬ ফুট ও প্রস্থ ১৬ ফুট। গভীর বঙ্গোপসাগরে তিমিটির মৃত্যু হওয়ায় শরীরের বিভিন্ন অংশ পচে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।

পৃথিবীতে ৭৯ থেকে ৮৪ প্রজাতির তিমি রয়েছে যার মধ্যে ব্রাইডস তিমির প্রজাতি রয়েছে ৩-৪টি , যারা ইন্দো-পেসিফিক সমুদ্র অঞ্চলে বিচরণ করে। কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে পাওয়া তিমিটি ব্রাইডস প্রজাতির, যার বৈজ্ঞানিক নাম বেলিনিওপটেরা ইডিনি (Balaenoptera edeni)।

জানা গেছে, তিমিটির কঙ্কাল উত্তোলনের পর সেগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং রিএসেম্বলিং করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা এবং বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি টিম গঠন করা হয়েছে। সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তিমি বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণার জন্য কঙ্কালটি বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হবে। পরবর্তী সময়ে বিওআরআই এর আওতায় মেরিন অ্যাকুরিয়াম স্থাপন কার্যক্রম শুরু হলে সেখানে কঙ্কালটি হস্তান্তর করা হবে। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের ইনানীতে অবস্থিত বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে সংস্থাটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান , ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল সৈকতের হিমছড়ি অংশে বিশাল আকৃতির মৃত তিমিটি ভেসে আসে। সেসময় তিমিটি সৈকতের বালিয়াড়িতে পুঁতে ফেলা হয়। সমুদ্র সম্পর্কিত সকল তথ্য বা মানুষকে সমুদ্রের প্রতি আগ্রহী করে তোলা, প্রদর্শনী, সমুদ্র সম্পর্কিত গবেষণা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কারণে কঙ্কালটি সংগ্রহ করার কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট । পুঁতে রাখা জায়গাটি নির্ধারণ করে বালিয়াড়ির প্রায় ২০ ফুট গভীরে খুঁড়ে সংগ্রহ করা হয় এ তিমিটির কঙ্কাল।

তৌহিদা রশীদ  বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অনুরোধে ইনস্টিটিউটকে তিমির কঙ্কাল সংগ্রহ ও গবেষণার জন্য তিমিটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত ২২ জানুয়ারি তিমিটির কঙ্কাল উত্তোলন করার কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২৩ জানুয়ারি তিমির আশেপাশের সম্পূর্ণ বালি অপসারণ করে তিমির কঙ্কাল উত্তোলন করা সম্ভব হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) তিমির সম্পূর্ণ কঙ্কাল উত্তোলন করা সম্পন্ন হয়। 

কঙ্কাল উত্তোলনে অংশগ্রহণ করেন, আবু সাঈদ মুহাম্মদ শরীফ, সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার মো. জাকারিয়া, সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার মো. হানিফ বিশ্বাস, সাইন্টিফিক অফিসার এবং বিওআরআই এর অন্যান্য সহযোগীরা।

ঢাকা বিজনেস/আনাম/এনই 



আরো পড়ুন