গেলো তিন
সপ্তাহ ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে কেনাবেচা হচ্ছে নতুন ধান। তবে
ভরা মৌসুমেও মোকামে ধানের বেচাকেনা কমেছে ৮০ শতাংশেরও বেশি।
ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, মোকামে আসা নতুন ধান এখনো ভেজা। ভেজা ধানে থেকে
চালের পরিমাণ আশানুরূপ পাওয়া যায় না। এছাড়া, মিলাররাও মোকাম থেকে এখনো
পুরোদমে ধান কেনা শুরু করেননি। ফলে মোকামে ধানের আমদানিও কমিয়ে দিয়েছেন
বেপারিরা।
চলতি
আমন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান নিয়ে কৃষকরা আসছেন পূর্বাঞ্চলের
বৃহত্তম ধানের মোকাম আশুগঞ্জের বিওসি ঘাটে। কিশোরগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ,
নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও জামালপুরসহ হাওরাঞ্চলের ধান নদীপথে কৃষক ও
ব্যাপারিরা নিয়ে আসছেন। তবে আকস্মিকভাবে ধানের দর কমে যাওয়ায় চলতি ভরা
মৌসুমেও মোকামেই ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনা কম। যেখানে আগে প্রতিদিন ৫০/৬০
হাজার মণ ধান কেনাবেচা হতো, সেখানে এখন ১২/১৫ হাজার মণে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে
পর্যাপ্ত ধান থাকার পরও বেপারিরা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।
ব্যাপারিরা
জানান, বস্তাপ্রতি ধানের দাম কমেছে ১০০ থেকে দেড়শ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও
বিআর-২৯ ধান ১ হাজার ৪২০ থেকে ১ হাজার ৪৩০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা কমে ১
হাজার ৩৫০/১ হাজার ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন ধান (সরু-৩৯ ও ৪৯) ১
হাজার ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন তা ১ হাজার ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রি
হচ্ছে। আর মোটা ধান ৯২০ থেকে ৯৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তারা
আরও জানান, নতুন ধান মোকামে আসায় ধানের দর কিছুটা কমেছে। বর্তমান দামে ধান
বিক্রি করে তাদের তেমন মুনাফা হচ্ছে না। ফলে আমদানি কমে গেছে। পুরনো
বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের ধানের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ কম মোকামে। ফলে এ দুই
জাতের ধানের দামও কিছুটা বেশি।
জেলা
চালকল মালিক সমিতি সভাপতি বাবুল আহমেদ বলেন, ‘বৃহত্তর হাওড়াঞ্চলের কৃষক ও
আড়ৎদাররা প্রতিদিন নদীপথে ৫০/৬০ হাজার মণ ধান নিয়ে এলেও এখন তা কমে
দাঁড়িয়েছে ১২/১৫ হাজার মণে। আকস্মিক ধানের দরপতন হওয়ায় মোকামে কমেছে ধানের
কেনা বেচা।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা জাকারিয়া মোস্তফা বলেন, ‘কারসাজির মাধ্যমে কেউ যেন ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, সেজন্য মনিটরিং টিম কাজ করছে।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/