১৪ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার



সন্ধ্যা হলেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে ব্যস্ত শহরে!

আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া || ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:১২ এএম
সন্ধ্যা হলেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে ব্যস্ত শহরে!


শীতের আমেজ শুরু হতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। বাহারি সব পিঠাপুলি নজর কাড়ছে ক্রেতাদের। সন্ধ্যা হলেই পিঠাপুলির দোকানগুলোতে বেচা-বিক্রির ধুম পড়ে। চলে মধ্য রাত পর্যন্ত। সন্ধ্যার পর থেকেই পৌরসভার জনবহুল অলিগলি ও রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে দাঁড়িয়ে বা বসে লাইন দিয়ে পিঠা খেতে দেখা যায় অনেককেই।

শীত মৌসুমে প্রতিটি বাড়িতে পিঠাপুলি বানানোর অয়োজন গ্রাম বাংলার চিরায়িত রীতি। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে ঘরে ঘরে পিঠাপুলি তৈরির আয়োজন এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ব্যস্ততা ও পারিপার্শ্বিক সমস্যায় নিজ হাতে পিঠাপুলি তৈরির আয়োজন কমে গেলেও পিঠাপ্রীতি ও ভোজনপ্রীতি কিন্তু থেমে নেই। পিঠাপ্রেমীরা এখন দোকানের পিঠার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। বাড়িতে পিঠা বানানোর ঝামেলা এড়াতে অনেকেই দোকান থেকে পিঠা ক্রয় করে স্বাদ মেটাচ্ছেন। আর এ পিঠা বিক্রি করেই জীবিকা চালাচ্ছেন অনেকে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চুলার অল্প আঁচে ধোঁয়া উঠছে। তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিতই, ভাপাসহ অন্যান্য পিঠা। আর চুলা থেকে নামানোর পর মুহূর্তেই তা চলে যাচ্ছে অপেক্ষমাণ ক্রেতার হাতে। দোকানগুলোর ভাপা, পাটিশাপটা, তেলের পোয়া পিঠা, চিতই পিঠা, নকশী পিঠা, পুলি পিঠা ও পাকন পিঠা বিক্রি হলেও চিতই আর ভাপা পিঠার চাহিদাই বেশি। চিতই পিঠার সঙ্গে সরিষা ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, মরিচ ভর্তা ও ধনিয়াপাতা ভর্তা দেওয়া হয়।

ডিম দিয়েও বানানো হয় চিতই পিঠা। ভাপা পিঠা ১০-১৫ টাকা, ডিমচিতই ৩০ টাকা, তেলের পিঠা ১০-১৫ টাকা, পাটিশাপটা ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দোকানে বসে সেই পিঠা খাচ্ছেন। কেউবা নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার বিরাসার বাসস্ট্যান্ড, ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড, বর্ডার বাজার, হালদার পাড়া, টেংকের পাড়, কুমারশীল মোড়, মেড্ডা বাসস্ট্যান্ড, পূর্ব পাইকপাড়া, সদর হাসপাতাল রোড, পৌর মার্কেট, সুপার মার্কেট, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, ফকিরাপুল ব্রিজ, টিএ রোড, কালীবাড়ি মোড়, রেলওয়ে স্টেশন টার্মিনাল ও স্টেশন রোড, মুড়াইল বউবাজার, কাউতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে, মোড়ে, পাড়া-মহল্লায় ও অলিগলি আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে কয়েকশ মৌসুমী পিঠার দোকান।


টেংকের পাড় এলাকায় একটি পিঠার দোকানে কথা হয় শাহিন মিয়া নামে এক ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধির সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায়। পেশাগত কারণে প্রায় ৩ বছর যাবত ফুলবাড়িয়ায় থাকি। প্রতিবছরই শীত মৌসুমে এখানে পিঠা খেতে আসি।’

টেংকের পাড় গেইটের সামনের মৌসুমী পিঠা বিক্রেতা কুলসুম বেগম বলেন, ‘ভাপাপিঠা, চিতই পিঠা বিক্রি করি। আমার দোকানে ভালোই বেচা-বিক্রি হয়। ১৮ বছর যাবত পিঠা বিক্রি করি। আয় থেকে সংসার ভালোই চলছে।’

টিএ রোড পিঠাঘরের বিক্রেতা বিল্লাল বলেন, ‘এখানে মানসম্মত শীতের সব ধরনের পিঠা পাওয়া যায়। ক্রেতা ভালোই আসে। সন্ধ্যা থেকে পিঠা বিক্রি শুরু করি। আমাদের দোকানে ভাপা, পাটিশাপটা, চিতই পিঠা, নকশী পিঠা, পুলি পিঠা ও পাকন পিঠা বিক্রি হলেও চিতই আর ভাপা পিঠার চাহিদাই বেশি।’

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন