১৪ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার



শিল্প-সাহিত্য
প্রিন্ট

দুটি কবিতা

আরিফা ইয়াসমিন || ১৯ জুন, ২০২৩, ০৪:৩৬ এএম
দুটি কবিতা


শূন্য শেষতক
আমাদের কিচ্ছু আর আমাদের থাকে না!

দু-পা সামনে দিয়ে
বসে দেখতে থাকা
দপদপ করা ধমনীটাও না!

মা-বাবা, প্রাণপ্রিয় স্বামী কিংবা স্ত্রী 
খুব পছন্দের পাতাবাহার
প্রিয় গান,খাবার 
যত্নে রাখা অলংকার
দুর্বিনীত অহংকার
ক্ষমতার জয়জয়কার 
কিচ্ছু না!

আমার কিছুই আর শেষতক আমার থাকে না।
হাতের রেখা,ভাগ্যের লেখা
আঙিনায় আরামের দোলনা
রোজ আগলে রাখা ভালোবাসা,
খুব আদরের নিজের শরীর কিংবা স্বপ্নটা
কিছুই আর আমার থাকে না!

কিচ্ছু না! কারও ই না!

আমরা যেখান থেকে এসেছি 
সেখানেই মিশে যাই শেষে!

এভাবেই চাই জন্ম-জন্মান্তর 
কিছু হারানোর ভয় আমারও হয়
বারো বছর পর ফিরে
পেয়েছি
যা রেখে গিয়েছি।

এরপর
যখন আবার হবে ঘরে ফেরা
তখনো কি এভাবেই অপেক্ষায় থাকবে
আমার একাকী ঘর,
দুঃখিনী নারী! 

আচ্ছা নারীদেরই কেন এ রকম দুঃখিনী হতে হয়!
কেন শক্তি হয়ে বলে না,
উড়ে যা, যেখানে পারিস!
নাড়ির টান আমারও হয়
আর স্বপের টানও!

খুব করে ধরে রেখেছিলাম শেষ অব্দি,
এই ফেরা না ফেরার অনুভূতি। 

শেষ রাতগুলো এমনই বিমর্ষ হয় কি না
কে জানে!
কিছু হারানোর ভয়ে
গোঙানির আওয়াজ সে সময় আমারও হয়,
জানি, আমার নারীরও হয়!
হয়তো বুক ভেঙে আসে,
আটকে দিতে চায় সময়ের চাকা
হয়তো ভাবে কাজ নেই আর অত বড় হয়ে
যত বড় হলে দূরে যেতে হয়
ভুলে যেতে হয়!

অপেক্ষায় কাটাতে হয় এক গৌরবান্বিত নারী জীবন!
কিছু হারানোর ভয় একা আমার হয় না
জানি, আমার নারীরও হয়!

এরপর শেষ রাত পেরিয়ে সকাল আসে
প্রিয় পায়রাগুলো হেলে-দুলে হেঁটে যায় সামনে, 
বাক-বাকুম করে হয়তো 
খেয়াল করা হয় না।

আচ্ছা ওরাও কি অপেক্ষায় থাকবে,
আবার কোন এক বারো বছর শেষের? 
এ সময় অনেক কিছু হারানোর ভয় হয় আমার, 

নাড়ি
আর নারীর টানও হয়।
তারপরও ভেসে যেতে হয় খড়কুটো যা-ই পাই, আঁকড়ে
জীবন যে দু'হাত পেতে বসে আছে
না গিয়ে কি আমি পারি!



আরো পড়ুন