১৫ মার্চ ২০২৫, শনিবার



৬ দিনে হিলি দিয়ে এলো ৪ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ

আনোয়ার হোসেন বুলু, হিলি (দিনাজপুর) || ১২ জুন, ২০২৩, ১১:৩৬ এএম
৬ দিনে হিলি দিয়ে এলো  ৪ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ


সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর গেলো ৬ দিনে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আর পেঁয়াজ নিয়ে ১৫৬টি ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এদিকে, পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও আমদানি শুরুর পর থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ যে দামে বিক্রি হচ্ছিল, একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। সোমবার (১২ জুন) আমদানিকারক, বন্দর কর্তৃপক্ষ, আড়তদারসহ খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. লাবু মিয়া বলেন, ‘আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর গত ৫ জুন থেকে হিলি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। আমরা প্রতিদিনই পেঁয়াজ আমদানি করছি। প্রথমদিনে ৩ ট্রাকে ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। এরপর থেকে বাড়তেই আছে পেঁয়াজ আমদানি। গত ১১ জুন একদিনে সব্বোর্চ ৪৯ টি ভারতীয় ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।’

আমদানিকারক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পেতে সরকার টানা আড়াই মাস বন্ধ রাখে। পরে পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বগতির কারণে চলতি মাসের ৫ জুন থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই আমদানিকারকেরা প্রতিদিন পেঁয়াজ আমদানি করছেন। এরফলে পেঁয়াজের বাজার অর্ধেকে নেমে এসেছে। যেখানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।’

মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। আর বন্দর অভ্যন্তরে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৩৩ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবছর কোরবানির ঈদের সময় পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ে। আশা করছি, পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়বে। কমে আসবে দামও।’

স্থানীয় আড়তদার মো. জহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বন্দর থেকে পাইকারি ৩৩ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে কিনছি। আর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এরমধ্যে আছে লেবার ও পরিবহন খরচ। সব খরচ বাদ দিয়ে কেজিতে ১ টাকা লাভ লাকে।’

হিলি বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. মইনুল হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসায় দেশি পেঁয়াজের দামও কমে গেছে। ৯০ টাকা কেজির দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর আমরা ভারতীয় পেঁয়াজ আড়তদারদের কাছ থেকে ৩৮ টাকা কেজি দরে কিনে এনে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, সরকার পেঁয়াজ আমদানিতে ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) দেওয়ার পর ৫ জুন থেকে এই বন্দর দিয়ে ১৫৬ ভারতীয় ট্রাকে ৩ হাজার ৮৭৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছেন আমদানিকারকেরা। 

এরমধ্যে ৫ জুন ৩ ট্রাকে ৬০ মেট্রিক টন, ৬ জুন ৪২ ট্রাকে ৮৪০ মেট্রিক টন, ৭ জুন ১৩ ট্রাকে ২৬০ মেট্রিক টন, ৮ জুন ১৪ ট্রাকে ২৮০ মেট্রিক টন, ১০ জন ৪৯ ট্রাকে ১ হাজার ৩৯৮ মেট্রিক টন ও ১১ জুন ৩৫ ট্রাকে ১ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন।

পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সোহবার হোসেন বলেন, ‘আইপি পাওয়ার পর থেকে আমদানিকারকেরা প্রতিদিনই  হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করছেন। পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে। পেঁয়াজ কাঁচা পন্য। তাই কাস্টমসের কার্যক্রম শেষে দ্রুত খালাসের জন্য পানামা পোর্ট কর্তৃপক্ষ গাড়ি খালাসের জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা করে রেখেছে। যাতে আমদানিকারকেরা দ্রুত পেঁয়াজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন